উজ্জীবিত করার সঙ্গে সতর্কও করলেন ওবামা-মিশেল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা (ডানে) ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামা। ছবি: সংগৃহীত
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৪ | ২১:১৭
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর ইউনাইটেড সেন্টারে ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে তাদের দেওয়া ভাষণ ডেমোক্রেটিক শিবিরকে নতুন করে উজ্জীবিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওবামা ও মিশেল দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রতি আবারও সমর্থন প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তারা নভেম্বরের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে ভোট দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার সম্মেলনের সমাপনী দিনে বক্তব্য দেবেন কমলা হ্যারিস।
গতকাল বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্মেলনে উপস্থিত দর্শক-সমর্থকদের উদ্দেশে মিশেল বলেন, আশা করছি, ডেমোক্র্যাটরা আবার আসছে। বারাক ওবামা তাঁর বক্তব্যে কমলা হ্যারিসের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে রিপাবলিকান প্রার্থীর সমালোচনা করে বলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কেবল ‘তর্জন-গর্জন’ আর ‘বিশৃঙ্খলা’ হয়েছে।
বক্তব্যে ওবামা দম্পতি নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতারও পূর্বাভাস দেন। তিনি বলেন, চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে দোদুল্যমান রাজ্যগুলো ভাগ্য নির্ধারণীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। ওবামা বলেন, ভুল করবেন না; এটা তীব্র লড়াই হতে চলেছে। যে কোনো দ্বিধা মুছে ভোট দিতে আসুন।
আমাদের শোষণ করার প্রচেষ্টাকে রুখে দিন। ‘নতুন অধ্যায়ে’র জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। কমলাও দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত আছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী হন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পরে ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের বয়স নিয়ে দলের অভ্যন্তরে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি তাঁকে সরে দাঁড়ানোর চাপ বাড়তে থাকে।
এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক টেলিভিশন বিতর্কে তাঁর ভরাডুবি হয়। এ প্রেক্ষাপটে বাধ্য হয়ে সরে দাঁড়ান বাইডেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী দিন সোমবার তিনি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কমলা হ্যারিসের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ২০২০ সালের নির্বাচনে কমলাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করা ছিল তাঁর পুরো রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।
ওই রাতে বক্তব্য দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার তাঁর স্বপ্ন ভেঙে যায়। তবে হিলারির আশা, তিনি না পারলেও কমলা হ্যারিস ভাঙবেন সেই সুউচ্চ, কঠিন বাধার দেয়াল। তিনি বলেন, এখন কমলা হ্যারিসের সময় এসেছে দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হয়ে বাধার দেয়াল ভাঙার।
হিলারি যার কাছে হেরে গিয়েছিলেন, সেই ট্রাম্পের সামনে এবার কমলা। এ কারণে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেদিকে নজর থাকবে সবার। শিকাগোয় সমবেত দর্শকদের উদ্দেশে হিলারি বলেন, এখন মশাল হাত বদল করার সময় এসেছে।
আমরা এতদিন একসঙ্গে সবচেয়ে উঁচু, শক্ত কাচের দেয়ালে অনেক ফাটল ধরিয়েছি। এখন যেন সেই কাচের দেয়ালে কমলা হ্যারিস হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছেন, আর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিচ্ছেন।
বাইডেন সরে দাঁড়ানো ও কমলার দায়িত্ব নেওয়ার পর বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ছে। সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোতে ট্রাম্পকে সমানে সমান টেক্কা দিয়েছেন কমলা। কোনো কোনোটিতে তিনি এগিয়ে গেছেন।
ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলন চলাকালে বিরোধী রিপাবলিকানরা বসে নেই। তারা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার ট্রাম্প ও তাঁর রানিং মেট জেডি ভ্যান্স উইসকনসিনে একাধিক সভা-সমাবেশ করেন। ভ্যান্স দাবি করেন, ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিলেন কমলা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ দমনে ব্যর্থতার কথাও বলেন।