পূর্বপুরুষদের অস্তিত্বের সন্ধানে...

ছবি: বিবিসি
নাইমুর রহমান
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪ | ২১:০৪
ডিএনএ বংশতত্ত্ব পরীক্ষার কিটগুলো বর্তমানে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। ঠিক তেমনি হেরিটেজ ট্যুরিজম মানুষকে তাদের শেকড়ের সঙ্গে পুনঃসংযোগ করতে সহায়তা করছে। এতে পরিবারের উৎস ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পূর্বপুরুষদের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইতালি, ঘানা, স্কটল্যান্ড, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের পর্যটনকে প্রাধান্য দিয়ে ভ্রমণকারীদের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে সহায়তা করছে।
ইতালি
বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮ কোটি মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের ইতালীয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয় তাদের জনগণের অস্তিত্বের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে ২০২৪ সালকে ‘ইতালির শেকড়ের বছর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারা একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে, যা পর্যটকদের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবারিক ইতিহাস খুঁজে পেতে সহায়তা করছে। ইতালির বংশতত্ত্ব সংক্রান্ত ইতিহাস অনুসন্ধানে ট্যুর অপারেটররাও সহায়তা করছে। খবর বিবিসি।
স্কটল্যান্ড
বিশ্বব্যাপী ৪ কোটির বেশি মানুষ স্কটিশ বংশোদ্ভূত। ফলে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক তাদের পূর্বপুরুষদের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে যুক্তরাজ্য গঠনকারী এই দেশটিতে ফিরে যান। ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে ক্যাম্পবেল ক্যাসল, জারলশফ প্রাচীন নর্স বসতি মানুষের অস্তিত্ব অনুসন্ধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত। স্কটল্যান্ডের সরকার ‘স্কটল্যান্ডস পিপল’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিবারিক ইতিহাস অনুসন্ধানে সহায়তা করে।
ঘানা
ঘানা একসময় আটলান্টিক দাসবাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। এখন আফ্রিকার প্রবাসীদের তাদের শেকড়ে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এখানকার ঐতিহাসিক স্থানগুলো পর্যটকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে এলমিনা কেল্লা। বিভিন্ন ট্যুর এজেন্সি সেখানে বিশেষ ধরনের ভ্রমণের আয়োজন করে। ভ্রমণকারীরা তাদের পূর্বপুরুষদের ইতিহাস জানতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে অনেক ইউরোপীয় অভিবাসীকে স্বাগত জানিয়েছে। তবুও প্রাথমিকভাবে আদিবাসী জনগণের উপর এর যে প্রভাব পড়েছে তা অনেকাংশে উপেক্ষিত। তবে কিছু পর্যটন সংস্থা এখন স্থানীয় আদিবাসী নেতাদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে তাদের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ করতে সচেষ্ট রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জর্জিয়ার ম্যাকন শহরটি একসময় ছিল মুসকোগি (ক্রিক) জাতির ৬০টি গ্রাম।
ভারত
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাসী জনগণের দেশ ভারত। দেশটির প্রায় দুই কোটি মানুষ বিদেশে বাস করছেন। ভারতের সরকার সম্প্রতি ‘প্রবাসী ভারতীয় এক্সপ্রেস’ নামে একটি বিশেষ ট্রেন চালু করতে যাচ্ছে। এতে দেশটির ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থানগুলো ভ্রমণের সুযোগ তৈরি করেছে। ট্রেনটি ২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করবে।
মানুষের অস্তিত্ব খুঁজে ফেরার এই ভ্রমণ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখছে। এই ধরনের ভ্রমণ ছোট গ্রামের মতো ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলগুলোয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাচ্ছে এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে সহায়তা করছে।
- বিষয় :
- ভারত
- যুক্তরাষ্ট্র
- ডিএনএ টেস্ট