ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা

কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি

কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬:৪৯ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬:৫০

পাড়ার গলিতে ক্রিকেট খেলার সময় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরু জেলার কুডুপু এলাকার ভাত্রা কাল্লুর্তি মন্দিরের কাছে রোববার ঘটনাটি ঘটেছে। খেলার সময় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ায় তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ঠিক কী ঘটেছিল, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল সে ব্যাপারটি এখনও পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে কর্ণাটক রাজ্য সরকার। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ। এরই মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে সেখানে ক্রিকেট ম্যাচ চলছিল। টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ১০টি দলের শতাধিক খেলোয়াড়। খেলার সময় দুই ব্যক্তির মধ্যে বচসা হয়। হঠাৎ করেই ওই ঘটনায় আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে পড়েন। একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে অনেকেই তখন লাঠিসোঁটা নিয়ে তার ওপর চড়াও হয়, পেছন থেকে অনেকে লাথিও মারেন। নিহত ওই ব্যক্তি কেরলের বাসিন্দা, তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। তবে এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। 

বিকেল ৩টার দিকে ওই ঘটনা ঘটলেও সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর বিষয়টি জানতে পারে স্থানীয় পুলিশ। এই ঘটনায় কুলশেখর চৌকির বাসিন্দা দীপক কুমার নামে এক ব্যক্তি কিছু ছবি ও ভিডিওসহ থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরই নড়েচড়ে বসে ম্যাঙ্গালুরু গ্রামীণ পুলিশ। অভিযোগ পেয়েই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। 

রাতেই ওয়েনলক জেলা হাসপাতালের পক্ষে যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসে তাতে জানা যায়, ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে অনবরতভাবে আঘাতের কারণে তার শরীরের ভেতরে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়। ওই ব্যক্তির পিঠ, নিতম্ব ও যৌনাঙ্গে কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাতের চিহ্ন নথিভুক্ত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।  

এই ঘটনায় ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল জানান, ‘এটি অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নজিরবিহীন ঘটনা। ওই ব্যক্তির শরীরের আঘাত যথেষ্ট ভয়ঙ্কর। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’ 

পুলিশ কমিশনার জানান, এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সকলেই কুডুপু, নির্মারগা, ভামঞ্জুর ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এই ঘটনার পেছনে ২৫ জন জড়িত। গণপিটুনিতে মৃত্যুর ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই মামলার সাজা হিসেবে দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা ফাঁসিও হতে পারে। 

এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা। রাজ্যের মানুষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঠিক কী ঘটেছিল, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল সে ব্যাপারে আমরা এখনও পরিষ্কার নয়। এখনই কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা ঠিক নয়। 

আরও পড়ুন

×