ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফায় আলোচনায় বসছে ইরান

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফায় আলোচনায় বসছে ইরান

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫ | ১৬:১২

পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফায় বসছে ইরান। আজ শুক্রবার ইতালির রাজধানী রোমে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। গত বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তেহরান ও মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান।

গত ১২ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক ইস্যুতে চার দফা বৈঠক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এটাই দুপক্ষের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংলাপ।

এএফপি জানায়, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাঈদ এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, ‘ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম দফা বৈঠক শুক্রবার রোমে অনুষ্ঠিত হবে।’

তেহরানও বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাঈ এক বিবৃতিতে জানান, ‘ওমানের প্রস্তাবে তেহরান রোমে আরেক দফা আলোচনায় অংশ নিতে সম্মত হয়েছে।’

আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে লাগাম টানার বিনিময়ে তাদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে একটি নতুন সমঝোতায় পৌঁছানো। 

তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে—যদিও তেহরান দাবি করছে তাদের কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পারমাণবিক বিষয় নিয়ে চলমান আলোচনায় সমঝোতার বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি না, এই আলোচনায় কোনো ফল আসবে। কী হবে, তা-ও নিশ্চিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার অস্বীকার করা ‘একটি বড় ভুল’।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক স্টিভ উইটকফ ৯ মে ডানপন্থি গণমাধ্যম ব্রেইটবার্ট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, ‘ইরানে আর কখনও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থাকতে পারবে না। এটাই আমাদের ‘রেড লাইন’।’

উত্তরে ইরান বারবার বলেছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার ‘অপরিবর্তনীয়’ ও ‘অলোচনা-রহিত’।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রোববার বলেন, ‘চুক্তি হোক বা না হোক—ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে থাকবে।’

বর্তমানে ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশের অনেক বেশি। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের নিচে।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের তেল রপ্তানি ও ব্যাংকিং খাতে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। পরের বছর থেকে ইরান চুক্তির আওতাধীন দায়িত্বগুলো পর্যায়ক্রমে কমাতে শুরু করে।

চুক্তির অংশ থাকা ইউরোপের তিন শক্তি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি—চুক্তিভঙ্গের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়ে ভাবছে। তবে এই সুযোগ অক্টোবরেই শেষ হয়ে যাবে।

এর আগে চলতি মাসে আরাগচি হুঁশিয়ার করেন, ইউরোপীয় শক্তিগুলো যদি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পথে এগোয়, তাহলে তা ‘অপূরণীয় পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।

আরও পড়ুন

×