ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে শর্ত মানা হয়নি: হামাস

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে শর্ত মানা হয়নি: হামাস

গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: আনাদোলু

অনলাইন ডেস্ক 

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫ | ২০:২৭

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ইসরায়েল। তবে হামাস বলছে, তারা যেসব দাবি জানিয়ে আসছে, ‘ইসরায়েলের সহযোগিতায় করা’ যুক্তরাষ্ট্রের ওই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সেই দাবিগুলো মানা হয়নি। সংগঠনটি আরও জানায়, শর্ত মানা না হলেও তারা পরিকল্পনাটি পর্যালোচনা করছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত নৃশংসতার মধ্যেই আবার যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দুই পক্ষের সামনে এলো।

ইসরায়েলের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, গাজায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জিম্মিদের পরিবারকে বলেছেন– ইসরায়েল ওয়াশিংটনের প্রস্তাবিত চুক্তিতে রাজি হয়েছে। প্রস্তাবটি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিটও ইসরায়েলের সম্মতির কথা জানান।

গত ২৩ মে রয়টার্স প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়ার ওপর আলোকপাত করে। এতে দেখা যায়, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতে প্রথম সপ্তাহে জীবিত ও মৃত ২৮ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। সেই সঙ্গে ১২৫ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দি ও ১৮০ জন মৃত ফিলিস্তিনির দেহাবশেষ ফেরত দেবে ইসরায়েল। সম্ভাব্য পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ট্রাম্প এবং মধ্যস্থতাকারী মিসর ও কাতার নিশ্চিত করেছে যে, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করার সঙ্গে সঙ্গে গাজায় আরও ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হবে। পরিকল্পনায় শর্ত দেওয়া হয়েছে– শুধু স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই হামাস শেষ ৩০ জিম্মিকে মুক্ত করবে। তবে এ পরিকল্পনায় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি নেই। মূলত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটি এ বিষয়টিতে আপত্তি জানিয়ে আসছে। তারা চায় গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলের সেনারা যেন সেখান থেকে ফিরে যায়।

হামাস বলছে, তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে। হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, তারা ইসরায়েলের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছেন। 

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শর্তাবলিতে ইসরায়েলের অবস্থানের প্রতিধ্বনি রয়েছে। এতে যুদ্ধ শেষ করার, ইসরায়েলের সেনাদের গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার বা হামাসের দাবি অনুযায়ী সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নেই। এর আগেও একাধিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মতানৈক্যের কারণে ভেস্তে যায়।

এ অবস্থায় শুক্রবার ইসরায়েলের হামলায় একদিনে গাজার বিভিন্ন স্থানে আরও ১৮ জন নিহত হন। উপত্যকার নেতজারিম করিডোরে এক বিতরণ কেন্দ্রে ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি আহত হন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এ ত্রাণ বিতরণ করছিল। জাতিসংঘের বারণ সত্ত্বেও অস্ত্রধারী সংগঠনটি গাজার বিভিন্ন স্থানে বিতরণকেন্দ্র খুলেছে। 

এ ছাড়া গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। কয়েকটি স্থানে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনকারীরা সড়ক অবরোধ করে ত্রাণের গাড়ি আটকে দেন। পর্যাপ্ত ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশ না করায় গাজায় এখনও খাদ্য সংকট তীব্র। অনেক স্থানে খাবার পৌঁছায়নি। উত্তর গাজায় যায়নি কোনো ত্রাণ। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক অফিস ওসিএইচএ বলছে, গাজায় কোনো প্রস্তুত খাবার পৌঁছাচ্ছে না। এটা পৃথিবীর ‘সবচেয়ে অভুক্ত থাকা এলাকা’।
 

আরও পড়ুন

×