ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বিবিসির প্রতিবেদন

ট্রাম্পের শুল্কে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতি হওয়ার পূর্বাভাস

ট্রাম্পের শুল্কে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতি হওয়ার পূর্বাভাস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫ | ০৫:২৫ | আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫ | ০৭:৩২

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের জেরে এ বছর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় একটি আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারক গ্রুপ। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি এখন ‘সাধারণ’ ২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে, যা আগের ৩ দশমিক ১ শতাংশ পূর্বাভাসের চেয়ে কম।

গতকাল মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওইসিডি এ হ্রাসের জন্য ‘উল্লেখযোগ্যভাবে’ বাণিজ্য বাধা বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছে। তারা সতর্ক করে বলছে, এর প্রভাবে প্রায় কোনো ব্যতিক্রম ছাড়া বিশ্বজুড়ে দুর্বল অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনুভূত হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে একটি বড় সংখ্যক দেশকে শুল্ক আরোপের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন। কিন্তু তাঁর এ অপ্রত্যাশিত পদ্ধতি ব্যাপক অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। 

ওইসিডির প্রধান অর্থনীতিবিদ আলভারো পেরেইরা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা প্রায় সবার জন্যই মূলত অবনতির পূর্বাভাস দিচ্ছি। অতীতে আমাদের পূর্বাভাসের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান অনেক কম হবে।’ গ্রুপটি এ বছর মার্কিন অর্থনীতির পূর্বাভাস ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ করেছে। সেই সঙ্গে ২০২৬ সালে আবারও প্রবৃদ্ধি ধীরগতির হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।

ওইসিডি সতর্ক করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকিতে আছে। ট্রাম্প তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় বারবার অঙ্গীকার করেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে মূল্যস্ফীতি কমবে। গতকাল মঙ্গলবার ওইসিডি তাদের প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘শুল্কের কারণে আমাদের অর্থনীতি ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে!’ তবে মার্কিন সরকারের সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মার্কিন অর্থনীতি বার্ষিক দশমিক ২ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে, যা ২০২২ সালের পর প্রথম সংকোচন।

অন্যদিকে, ওইসিডি এ বছর যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা মার্চ মাসে পূর্বাভাস দেওয়া ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ করেছে। এটি আরও পূর্বাভাস দেয়, ২০২৬ সালে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ১ শতাংশ বাড়বে, যা কয়েক মাস আগে তারা ১ দশমিক ২ শতাংশ বলেছিল। অন্যান্য দেশের মতো ওইসিডিও বলছে, ‘বাণিজ্য উত্তেজনা’ ও ‘অনিশ্চয়তা বাড়ার কারণে’ যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে। কিন্তু গ্রুপটি বলছে, ব্রিটেন নিজস্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। 

গত মার্চে যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভসকে তাঁর স্ব-আরোপিত রাজস্ব নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন পাউন্ডের কল্যাণমুখী কার্যক্রম কর্তন করে ১৪ বিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। আগামী সপ্তাহে রিভস তাঁর ব্যয় পর্যালোচনা উপস্থাপন করবেন, যেখানে তিনি বিভাগীয় বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হবেন বলে শঙ্কা রয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষায় বিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 
 
মার্কিন শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি 

এএফপি জানায়, মার্কিন শেয়ারবাজার সপ্তাহের হতাশাজনক সূচনা পেছনে ফেলে গত সোমবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে দিন শেষ করেছে। বিনিয়োগকারীরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক হুমকি থেকে সৃষ্ট নতুন বাণিজ্য অনিশ্চয়তাকে উপেক্ষা করেছেন। এর আগে শুক্রবার  ট্রাম্প স্টিলের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার হুমকি দিলে আর্থিক বাজারে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তবে সোমবার বাজারের অগ্রগতি হয় এবং ওয়াল স্ট্রিটের তিনটি প্রধান সূচকই ঊর্ধ্বমুখী হয়ে দিন শেষ করে। এডওয়ার্ড জোন্সের বাজার বিশ্লেষক অ্যাঞ্জেলো কুরকাফাস বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এনভিদিয়া আয়ের কারণে বাজারের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি। আমরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। 

আরও পড়ুন

×