ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মানসিক চাপ কমাবে যে শাক 

মানসিক চাপ কমাবে যে শাক 

ছবি-সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১২:৩৯

সবচেয়ে প্রাচীন আর্য়ুবেদ হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মীতে আর্য়ুবেদিক গুন থাকায় বহু বছর ধরে ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্রাহ্মী উদ্বেগজনিত ব্যাধি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস এবং মস্তিষ্কের ক্রিয়া হ্রাসের মতো অবস্থার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এতে থাকা সক্রিয় পদার্থ, যেমন ব্যাকোসাইড, স্নায়বিক কার্যকলাপ বাড়ায়, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং মস্তিষ্কের কোষ পুনর্জন্মে সহায়তা করে। যেহেতু ব্রাহ্মী উদ্বেগ কমাতে এবং স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে উপকারী, তাই ব্রাহ্মী ঔষধিআয়ুর্বেদিক অনুশীলনকারীদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়।

ব্রাহ্মী মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একাধিক উপায়ে কাজ করে। বলা হয়, এই ভেষজটি নির্দিষ্ট নিউরোট্রান্সমিটার, যেমন অ্যাসিটাইলকোলিনের উৎপাদন বাড়ায়, যা স্মৃতি শক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে ব্রাহ্মী ফ্রি র‍্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মস্তিষ্কের কোষ রক্ষা করে। ব্রাহ্মীতে থাকা যৌগগুলো নতুন স্নায়ুকোষের বৃদ্ধি বাড়াতে পারে, ফলে শিশুদের স্মৃতির গঠন এবং স্মৃতিশক্তি ক্ষমতা আরও উন্নত হয়। 

পরিমিতভাবে নিয়মিত ব্রাহ্মী খেলে স্মৃতিশক্তি, একাগ্রতা এমনকি শেখার ক্ষমতাও উন্নত করে। বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় ব্রাহ্মীর চা রাখা যেতে পারে। অনেক শিশু পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না। ব্রাহ্মী অধ্যবসায় এবং একাগ্রতার ক্ষমতা বাড়ায়, যার ফলে শিশুরা তাদের পড়াশোনায় দীর্ঘ সময় ধরে লেগে থাকতে পারে। অনেকসময় বাচ্চারা স্কুলের চাপ বা সামাজিক সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারে। ব্রাহ্মী তার প্রশান্তিদায়ক বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত। এটি স্ট্রেস এবং উদ্বেগের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

এছাড়াও ব্রাক্ষ্মী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই রোজ এই ব্রাক্ষ্মী খেলে শরীরে বল বাড়ে। রক্ত পরিশুদ্ধ হয়। যারা অল্পেই দুর্বল হয়ে পড়েন তাদের জন্য ব্রাহ্মীর জুস কিন্তু খুবই ভাল।

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। ব্রাহ্মীর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি কোষ থেকে ক্ষতিকর দূষিত বের করে দেয়। ফলে ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।

বাত এবং প্রদাহ জনিত, ব্যথা, জ্বালা কমাতেও উপকারী এই ব্রাক্ষ্মী শাক। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারাও রোজ খেলে উপকার পাবেন। আলসারের চিকিৎসাতেও ব্যবহার করা হয় ব্রাক্ষ্মী।

রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্রাক্ষ্মী সহায়তা করে। ডায়াবেটিসের রোগীদের শরীরে রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যাদের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য খুব ভাল এই ব্রাহ্মী। 

কিভাবে খাবেন এই ব্রাহ্মী:
বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্রাহ্মী। তাই রোজ একচামচ এই শাক-পাতা খেতে পারলেই উপকার পাবেন। গরম ভাতে সামান্য ঘি দিয়ে এই শাক খেলে উপকার পাবেন। ব্রাহ্মীর জুস খেতে পারলে আরও বেশি উপকার হবে। এছাড়াও খুব সহজে ব্রাহ্মী চা তৈরি করে সেবন করা যেতে পারে।

ব্রাহ্মীর পরিমিত পরিমাণে সেবন প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়ের জন্যই নিরাপদ। তবে যে কোনো ভেষজ সেবনের আগে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে, তাদের যদি কোনো পূর্বস্থিত স্বাস্থ্যের সমস্যা থাকে বা তারা কোনো ওষুধ গ্রহণ করে থাকে তবে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ সঙ্গে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু শিশুর ক্ষেত্রে ব্রাহ্মী খাওয়ার ফলে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যেমন পেটের অস্বস্তি বা বমি ভাব দেখা দিতে পারে। অল্প পরিমাণে শুরু করে এবং শিশুর শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া করছে তা পর্যবেক্ষণ করে তারপর খাওয়া উচিত। যদি শিশুর মধ্যে কোনো অস্বস্তির লক্ষণ দেখা না যায়, তাহলে ধীরে ধীরে ডোজ বাড়ানো যেতে পারে।

আরও পড়ুন

×