'সম্রাটের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে'

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৯ | ০৯:২১ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ | ০৯:৫০
চলমান ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বুধবার। তবে এর আগেই অসুস্থতার 'কারণ' দেখিয়ে ভর্তি হয়েছেন তিনি হাসপাতালে।
কারাগার সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সম্রাট বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানান কারা কর্তৃপক্ষকে। এর পরই সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে।সেখান থেকে রেফার করা হয় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হৃদরোগ হাসপাতালের সিসিইউ-১-এর তিন নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। এরপর দুপুরে বেড পরিবর্তন করে ১২ নম্বর বেডে নেওয়া হয়।
হৃদরোগ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'সম্রাটের হার্ট সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেসবের রিপোর্টে তার হার্টে কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। তার হার্ট ভালো আছে। তিনি ভালো আছেন। তবুও তাকে ২৪ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। কারণ যে কোনো হার্টের রোগী এলে তাকে অবজারভেশনে রাখতে হয়।'
সম্রাটকে হাসপাতাল থেকে কখন ছাড়পত্র দেওয়া হবে- এমন প্রশ্নে পরিচালক জানান, সম্রাটের চিকিৎসায় সাত সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বুধবার সকালে বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হৃদরোগ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মহসিন আহমেদের অধীনে ভর্তি করা হয় সম্রাটকে। তার একাধিকবার ইসিজি করা হয়েছে। এ ছাড়া ইকো ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ১৯৯৮ সালে সম্রাটের হার্টে বাল্ব প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। একজন হার্টের রোগীর যে ধরনের লক্ষণ থাকে, তার একটিও নেই সম্রাটের। তরলজাতীয় খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে তাকে। সকালে লাল টি শার্ট-লুঙ্গি পরে গেলেও দুপুরে পোশাক পরিবর্তন করেন তিনি। কালো টি শার্ট-লুঙ্গি পরা অবস্থায় ছিলেন দুপুরে।
সকালে সিসিইউ-১-এ অবস্থান করছিলেন এমন একাধিক ব্যক্তি জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সম্রাটের ভাই রাশেদ ও স্ত্রী শারমিন পৃথকভাবে ওয়ার্ডে যান সম্রাটকে দেখতে। এ সময় শারমিন ও রাশেদ পরস্পরকে দেখে ক্ষুব্ধ হন। রাশেদ শারমিনের কাছে জানতে চান- তিনি কেন সম্রাটের কাছে এসেছেন? বেরিয়ে যেতে বলা হয় তাকে। এ সময় শারমিনও একই প্রশ্ন করেন রাশেদকে। এ নিয়ে দেবর-ভাবির তুমুল ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ছুটে এলে সটকে পড়েন তারা।
এছাড়া সম্রাটকে দেখার উদ্দেশে শত শত নেতাকর্মী হাসপাতাল চত্বরে ভিড় করেন; কিন্তু সম্রাটের দেখা পাননি। তাকে কারারক্ষী ও পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে।
সম্রাটের আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ পারভীন সমকালকে জানান, তিনিসহ চার আইনজীবী সকালে হাসপাতালে সম্রাটের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখা করতে দেননি।
ক্যাসিনো, অস্ত্র, মাদকসহ নানা অভিযোগে গত রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাটকে গ্রেফতার করে র্যাব। একই সঙ্গে তার সহযোগী ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকেও গ্রেফতার করা হয়। দু'জনকে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।