পোশাক কারখানা বদলে দিল হাজার নারীর জীবন

পটিয়ার সান ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড স্থানীয় নারীদের জন্য কাজের বড় সুযোগ তৈরি করেছে সমকাল
আহমদ উল্লাহ, পটিয়া (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪ | ১৩:২৭ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ | ১৩:৩৯
পটিয়া পৌর সদরের কাগজীপাড়া এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি পোশাক কারখানা ‘সান ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড’। কারখানা চালুর কয়েক মাসের মাথায় এটির পোশাক স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা ও জাপান। এই পোশাক কারখানায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন পটিয়ার নারীরা। এখানে ১ হাজার ৮০০ শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৩০০ জনই নারী। স্থানীয় নারীরা কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হওয়ায় জীবন বদলের স্বপ্ন দেখছেন।
কারখানার প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিমের স্বপ্ন ছিল এলাকার মানুষকে স্বাবলম্বী করা। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন পটিয়া পৌর সদরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাগজীপাড়ায় নিজ উদ্যোগে ‘সান ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড’ নামে পোশাক কারখানাটি স্থাপন করেন ২০১৮ সালের মার্চে। যেখানে কাজ করছেন ওই এলাকার স্থানীয় নারীরা। বিভিন্ন জায়গায় পোশাক সাপ্লাই দিয়ে কারখানাটি এগিয়েও যাচ্ছে। দিন দিন পোশাক শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সান ফ্যাশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল করিম বলেন, ‘আমাদের এই গার্মেন্টসের মাধ্যমে স্থানীয় কর্মজীবীরা এলাকাতেই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন। আমাদের চিন্তা রয়েছে, এই পোশাকশিল্পকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে পটিয়ার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার।’
কারখানার শ্রমিক ও আমজুরহাট এলাকার ইয়ানুর বেগম (৫০) বলেন, ‘স্বামী অসুস্থ হওয়ায় চট্টগ্রাম শহরের ইপিজেড এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতাম। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরে বাড়ির পাশে গার্মেন্টসে চাকরি করছি। পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করছি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াতেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
কারখানার শ্রমিক ও শান্তিরহাট এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মী দেবী (৬০) বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে কেডিএস গার্মেন্টসের চাকরি করে বাসা ভাড়া, খাওয়া মিলে কোনো টাকা জমা হতো না। এখন বাড়ির পাশে চাকরি করে বেতনের সম্পূর্ণ টাকা জমা রাখছি। পাশাপাশি আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।’
মানবসম্পদ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কারখানা শ্রম আইন শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে চলে। নিয়মিত শ্রমিকদের বেতন ও ওভারটাইম ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়। শ্রমিকরা তাদের ব্যক্তিগত মোবাইলে খুদে বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়। ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন।’
স্থানীয় পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমার এলাকায় গার্মেন্টস কারখানা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় নারী ও পুরুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এই পোশাক কারখানা স্থানীয়দের অভাব দূর করবে।’
পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদ করিম বলেন, কাগজীপাড়ায় হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এই গার্মেন্টস কারখানাটি তৈরি করা হয়েছে। এই এলাকায় বেকার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে এই গার্মেন্টসটি আরও বড় পরিসরে করা যাবে। এতে ব্যাপক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
- বিষয় :
- পটিয়া
- পোশাক কারখানা
- নারী শ্রমিক
- কর্মসংস্থান