ইকোনমিকস অলিম্পিয়াডে ক্ষুদ্র ঋণে দারিদ্র্য দূর করার প্রত্যয়

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযমসহ অতিথিরা সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫ | ০০:০০
‘অর্থনীতি শিক্ষা, দেশ গড়ার দীক্ষা’– এই প্রতিপাদ্যে গত শুক্রবার চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব। এতে চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০০ শিক্ষার্থী অংশ নেন। ক্ষুদ্র ঋণে দেশের দারিদ্র্য দূর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অংশগ্রহণকারীরা।
অলিম্পিয়াডে স্কুল-কলেজ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন ঢাকার মাস্টারমাইন্ড স্কুলের সুহা আহসান, দ্বিতীয় হন গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তানভীর ইসলাম, তৃতীয় হন প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মিসবা জাকারিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগে প্রথম হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এম আবির হাসান, দ্বিতীয় হন চবির জোনায়েদ সামী, তৃতীয় হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাতিন ইলহাম।
প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে অনলাইনে আঞ্চলিক বাছাই পর্ব শেষ করে নির্বাচিত ৩০০ শিক্ষার্থী নিয়ে হয় জাতীয় পর্বটি। বৃষ্টিমুখর সকালে চট্টগ্রাম কলেজে শুরু হয় অলিম্পিয়াড পর্ব। ৩০০ শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়– এ দুই ভাগে আলাদা করে পুরস্কার দেওয়া হয়।
অলিম্পিয়াড শেষে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম। তিনি অর্থনীতিবিষয়ক এ ধরনের অনুষ্ঠানকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম অর্থনীতি নিয়ে ভাবলে দেশ সমৃদ্ধ।’
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘অলিম্পিয়াড হলো তাত্ত্বিক পড়াশোনা আর বাস্তবিক প্রয়োগের মাঝে যোগসূত্র তৈরির মাধ্যম। অলিম্পিয়াডে যারা অংশগ্রহণ করেন তাদের জীবনবোধ ও বাস্তবিক জ্ঞান অন্যদের চেয়ে ভালো হয়।’
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডের চেয়ারম্যান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড নিছক এনজিও কাজ কিংবা ইভেন্ট নয়। এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। একটি সুগঠিত জাতি গঠন করতে হলে নাগরিকদের অর্থনৈতিকবোধ প্রগাঢ় হওয়া বাধ্যতামূলক। ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড দেশজুড়ে সেই সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে।’ তিনি চট্টগ্রামের মানুষদেরকে সহশিক্ষা কার্যক্রমে আরও বেশি সহায়ক ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান। সেন্টার ফর ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভের (সিওয়াইএ) আয়োজনে এই অলিম্পিয়াড এ বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম সিকান্দার খান, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুজাহিদুল ইসলাম, অলিম্পিয়াডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মোহাম্মদ মনসুরুল হক, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মোহাম্মদ শরিফ উদ্দিন, ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াড কার্যকরী কমিটির সভাপতি আল আমিন পারভেজ, সেন্টার ফর ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা সাইদ খান সাগর, চট্টগ্রাম ইকোনমিকস অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কাজী সদরুল্লাহ রাকিব।
স্কুল-কলেজ পর্যায়ে বিজয়ীরা ন্যাশনাল ক্যাম্পে অংশ নেবেন, সেখান থেকে নির্বাচিতরা যাবেন আজারবাইজানের বাকুতে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস অলিম্পিয়াডে।
- বিষয় :
- মুক্তিযুদ্ধ