ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন হলে অভিযোগ জানাবেন যেভাবে

জেনে রাখুন

ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন হলে  অভিযোগ জানাবেন যেভাবে

লোগো

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:৪১

ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধ এবং ভোক্তা-অধিকার লঙ্ঘনের কারণে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে জাতীয় ভোক্তা-অভিযোগ কেন্দ্র রয়েছে। ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, ভোক্তাদের অভিযোগ কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রহণ ও নিজ নিজ মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর এবং সংস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রয়েছে। 

ভোক্তা-অধিকারবিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা যেমন– নকল খাদ্যপণ্য প্রস্তুত, খাদ্যপণ্যে ভেজাল মিশ্রণ, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যপণ্য বিক্রয়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য প্রস্তুত, উৎপাদন বা বিক্রয়, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রয়, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতাকে প্রতারণাসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানানো যাবে।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এবং ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিদ্যমান অন্যান্য আইনের অধীন ভোক্তাদের অভিযোগকারীদের অভিযোগ কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রহণ করে অধিদপ্তর। প্রাপ্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার মনোনীত ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মনোনীত ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তার কাছ থেকে পাঠানো অভিযোগ নিষ্পত্তির তথ্য সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও সমন্বয় করে। 
আমলযোগ্য অভিযোগগুলো বিদ্যমান সংশ্লিষ্ট আইনের বিধানাবলির আলোকে নিষ্পত্তি করা হয়।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ধারা ৬০ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে কারণ উদ্ভব হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এই আইনের অধীন অভিযোগ দায়ের করতে হবে। অন্যথায় অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না। দায়ের করা আমলযোগ্য অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত ও জরিমানা আরোপ করা হলে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬(৪) অনুযায়ী আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারীকে দেওয়া হবে। 

কে অভিযোগকারী হতে পারেন
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ধারা ২(৩) অনুযায়ী, নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ এ আইনের অধীন অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন কোনো ভোক্তা; একই স্বার্থসংশ্লিষ্ট এক বা একাধিক ভোক্তা, কোনো আইনের অধীন নিবন্ধিত কোনো ভোক্তা সংস্থা; জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বা তার পক্ষে অভিযোগ দায়েরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা; সরকার বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো সরকারি কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী।

অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ধারা ৭৬(১) অনুযায়ী, ‘যে কোনো ব্যক্তি, যিনি সাধারণভাবে একজন ভোক্তা বা ভোক্তা হতে পারেন, তিনি ভোক্তা-অধিকারবিরোধী কাজ সম্পর্কে মহাপরিচালক বা মহাপরিচালকের নিকট ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন।’

যেখানে অভিযোগ দায়ের করা যাবে
যেসব জায়গায় অভিযোগ জানানো যাবে তার তালিকা রয়েছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে। কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর এবং একই ভবনে জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ জানানো যাবে। এ ছাড়া জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট এবং রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাররের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রতিটি জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেও অভিযোগ জানানো যাবে। 

যেভাবে অভিযোগ দায়ের করতে হবে
দায়ের করা অভিযোগ অবশ্যই লিখিত হতে হবে। ফ্যাক্স, ই-মেইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে পাঠাতে হবে। অভিযোগের সঙ্গে পণ্য বা সেবা ক্রয়ের রসিদ সংযুক্ত করতে হবে। অভিযোগকারী তাঁর পূর্ণাঙ্গ নাম, পিতা ও মাতার নাম, ঠিকানা, ফোন, ফ্যাক্স ও ই-মেইল নম্বর (যদি থাকে) এবং পেশা উল্লেখ করবেন। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে অনলাইনে অভিযোগ দায়েরের নির্দিষ্ট লিঙ্ক রয়েছে। 

আরও পড়ুন

×