দলিলপত্রের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের ভবিষ্যৎ

আফসান চৌধুরী
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ | ২০:১৪
মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণার সঙ্গে আমি যুক্ত আছি পঁয়তাল্লিশ বছরেরও বেশি সময়। এটা আমার গোটা জীবনকে প্রভাবিত করেছে। জীবনের উপলব্ধি– আমার সৌভাগ্য যে আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিছু প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যুরোক্রেটিক বাধা এসেছিল, তবে সাহায্যই পেয়েছি বেশি।
আমরা কাজ করার আগে ঠিক হয়েছিল, চার খণ্ড দলিল হবে আর দুই খণ্ড ইতিহাস হবে। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর হাসান হাফিজুর রহমান (হাসান ভাই) নতুন করে পরিকল্পনা জমা দিতে বললেন। পরবর্তী সময়ে, সংগত কারণ বিবেচনায় ইতিহাস না লিখে শুধু দলিলপত্র গ্রন্থনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসান ভাই সম্ভবত আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। প্রকল্পে আমরা চারজন ছিলাম। ইমামুর রশীদ, শাহ আহমেদ রেজা, ওয়াহিদুল হক ও আমি। তখন ছিল জিয়াউর রহমানের আমল। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যথেষ্টই ছিল। সেই সূত্রে অনেকেই ভেবেছিল, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ কী করেছে তা হয়তো জিয়ার সরকার বলতে দেবে না। সেরকম কোনো অভিজ্ঞতা আমাদের হয়নি। আমি চার খণ্ডের দলিল ও দুই খণ্ডের ইতিহাসের পরিকল্পনার পরিবর্তে ষোলো খণ্ডের দলিল পরিকল্পনা করলাম। এবং বেশ খাটুনির পর আমরা এ প্রকল্প পাস করালাম। এবং শেষ পর্যন্ত দলিলটা হলো। দলিল গোছানোর পর আমরা এগুলোকে গ্রন্থবদ্ধ করার কাজ শুরু করলাম।এ সময় ঘটে যাওয়া তিনটি ঘটনার কথা আমি বলব। ঘটনা ১ সেসময় বাংলাদেশে কতজন শহীদ হয়েছেন, এ নিয়ে প্রশ্ন চালু ছিল– প্রকৃত সংখ্যাটি কত। এ বিষয়ে শেখ সাহেবের আমলে একটা জরিপের মতো হয়েছিল। এটা জানত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হাসান ভাইকে মন্ত্রণালয় কথা দিয়েছিল জরিপের ফলাফলটা দেবে। আমরা তো ছিলাম মূলত সরকারি কর্মচারী। যদিও প্রকল্পের লোক বলে আমাদের কেউ সরকারি কর্মচারী মনে করতেন না। আমরা নিজেরাও না। মনে করতাম, আমরা একটা কাজ করতে এসেছি। সেই জরিপের ফলের খোঁজে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলাম। গিয়ে দেখলাম, ফল কোথায় আছে, কেউ বলতে পারে না। শুধু ফাইল চালাচালি হচ্ছিল। তারপর হঠাৎ একদিন মন্ত্রণালয়ের একজন স্টাফ আমাকে বললেন, “চলেন।” আমি তখন সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া তরুণ, লম্বা চওড়া, মুখে দাড়ি, লম্বা চুল। তিনি আমাকে সচিবালয়ের নিচের তলায় চা খেতে নিয়ে গেলেন। লোকটা ভালোমানুষ ছিলেন। বললেন, “আপনি কেন সেই দলিল খুঁজছেন, যে দলিল আপনাকে কোনোদিন দেওয়া হবে না?” “কেন দেওয়া হবে না?” আমি বললাম। তিনি বললেন, “যে সংখ্যাই আসুক না কেন, তা নিয়ে বিতর্ক হবে। এবং এই নির্দেশ একদম ওপর থেকে এসেছে, এই তথ্য দেওয়া হবে না।” সেই বিতর্ক কিন্তু আজও চলমান। তখন যারা ক্ষমতায় ছিলেন, মনে করেছেন, এই বিতর্ক মানুষের হাতে তুলে দেওয়া উচিত হবে না।
ঘটনা ২ এবার আসি স্বাধীনতার প্রসঙ্গে। হাসান ভাই তখন ব্রিটেনে গেছেন বিবিসি ও অন্যান্য গণমাধ্যমের দলিল সংগ্রহ করতে। এ সময় হঠাৎ আমাদের অফিসে ফোন করা হলো। বলা হলো, “আপনাদের অফিসে মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স থেকে লোক আসবে।” আমরা বেশ একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম। অবশ্য, ব্যক্তিগতভাবে আমার নিজের খুব একটা চিন্তা অনুভূত হচ্ছিল না বলেই মনে হয়। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা প্রামাণ্যকরণ কমিটি ছিল। সেই কমিটির প্রধান উপদেষ্টারা স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র যাচাই-বাছাই করেন। তারা যখন অনুমোদন দেন, তখনই তা দলিল হিসেবে গণ্য হয়ে পাণ্ডুলিপির অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রামাণ্যকরণ কমিটির প্রধান ছিলেন ড. মফিজুল্লাহ কবীর । তিনি আমার সরাসরি শিক্ষকও ছিলেন।
স্যারের বাসায় আমি গিয়েছিলাম বেশ কয়েকবার। দলিল প্রসঙ্গে আলাপে একদিন তাঁকে খুব চিন্তিত মনে হলো। বললেন, “আফসান, তুমি কি এমন কোনো দলিল লুকিয়েছ, যেটার কথা আমরা জানি না?” আমি বললাম, “দেখুন স্যার, আপনারা এমন অনেক দলিল চেয়েছেন যেগুলো আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি। কিন্তু যা পেয়েছি, তার ভেতর এমন একটা দলিলও নেই যার কথা আপনারা জানেন না।” স্যার বললেন, “যাক, আমি নিশ্চিন্ত হলাম। আমার আর দুশ্চিন্তা নেই।” এর কিছুদিন পরই আমাদের অফিসের সামনে মিলিটারির গাড়ি থামল। আর্মির একজন ভদ্রলোক এলেন, কর্নেল পদবি তাঁর। মফিজুল্লাহ কবীর স্যার চেম্বারে বসে আছেন। কর্নেল অবধারিতভাবে আর্মির গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য ছিলেন। তিনি যখন ঘরে এলেন, হঠাৎ একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো। কবীর স্যারের কাছে গিয়ে কর্নেল বিনীত স্বরে বললেন, “স্যার, আমি আপনার ছাত্র।”
আমরা যারা পরে শিক্ষক হয়েছি, তারা জানি এ সম্পর্কটা কী তীব্র আবেগের। স্যার বললেন, “তুমি কোন ব্যাচে ছিলে?” তিনি ব্যাচ নম্বর বললেন। আরও কিছু কথায় স্যারেরও ঠিকঠাক মনে পড়ল। হ্যাঁ, লোকটি স্যারের ছাত্রই বটে। কর্নেল বললেন, “প্রকল্পের সবাইকে একটু দেখতে চাই।” আমি স্যারের সঙ্গেই ছিলাম। এ ছাড়া আরও যারা ছিলেন, একে একে গিয়ে দাঁড়ালেন। আমাদের সঙ্গে জিল্লুর ভাই, রাজি ভাই ছিলেন। সবার সঙ্গে আলাপ করে কর্নেল বললেন, “এরা তো সবাই গবেষক। এখানে কাজ করেন। কেন আমাদের কাছে রিপোর্ট গেছে এরা সবাই পলিটিশিয়ান?” এর মানে কেউ আর্মিতে রিপোর্ট করছে আমরা দলিল নিয়ে রাজনীতি করছি। কর্নেল বেশ ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করলেন। বললেন, “আপনাদের সব দলিলের একটা ফটোকপি আমাকে দিন প্লিজ। ব্যস।” আমারা তাঁকে ফটোকপি বুঝিয়ে দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। তখন এরশাদের আমল শুরু হয়ে গেছে।
ঘটনা ৩ তখন আমাদের কাজ পুরোদমে চলছে এবং আমরা বেশ মুক্তভাবে চলতে ফিরতে পারতাম। ধরেই নেওয়া হয়েছিল, সরকারি কর্মচারী বলতে যা বোঝায় এরা তা না। একদিন এক সচিব বললেন, “এই যে এনারা দলিলপত্রের কাজ করছেন, কেউ কি দেখাশোনার জন্য আছে?” দেখা গেল আমরা যে দলিল করছি, আমাদের ওপর খবরদারি করার কেউ নাই। তিনি বললেন, “এভাবে হবে না। আমাদের তো দেখতে হবে।” নুরুদ্দিন আল মাসুদ সাহেব ছিলেন তখন সিএসপি অফিসার। পরে রাষ্ট্রপতির সচির হয়েছিলেন। পরে তাঁকে প্রধান করে একটা কমিটি করা হলো যে কমিটি দেখবে, কী দলিল যাচ্ছে না-যাচ্ছে। প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ডের সরাসরি দায়িত্বে আমি ছিলাম। পটভূমি ১৯৭১। দুই খণ্ডের দলিল তিনি খুঁটিয়ে দেখলেন। হঠাৎ তাঁর বাবার নাম পেয়ে গেলেন। তাঁর বাবা ১৯৫৪’র মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন। তিন দফায় দেখার পর তিনি ছাড় দিয়ে দিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রের কাজ করতে গিয়ে তিনটা সরকার পার হয়েছি আমরা। তিন সরকারের কোনো সরকারই কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রে হাত দেয়নি।
আমি মনে করি, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় যত কাজ হয়েছে তার ভেতর কোথাও এই ব্যাপারটা ঘটেনি। কেউ জোর করে কিছু প্রবেশ করায়নি বা বাদ দেয়নি। এখন আর এমনটা হওয়া সম্ভব না। এখনকার ইতিহাসবিদরা এজেন্ডাভিত্তিক ইতিহাসচর্চা করেন। তা সরকারপন্থিই হোক আর বিরোধী দলপন্থিই হোক। তাদের পক্ষে আজ ধারণাও করা সম্ভব না যে একসময় আমরা করতে পেরেছি এ কাজটা। কিছু ভ্রান্তি তো আছেই। যদিও সবচেয়ে বেশি দলিল সংগৃহীত হয়েছে এই প্রকল্পের আওতায়, এর পরও কিছু দলিল মিস গেছে। সরকারি দপ্তর, সেনাবাহিনীর সহস্রাধিক পাতার দলিল আমরা পাইনি। তবে যা পেয়েছি তার গ্রন্থনা নিয়ে সততার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ইতিহাস সংকলনের সংকট, মুক্তচিন্তা-মতপ্রকাশে অবরোধ প্রতিটা দপ্তর তা সরকারি হোক কি বেসরকারি, নিজেদের রক্ষা করার স্বার্থে তথ্য আটকায়, তথ্যের ওপর কাঁচি চালায়, তথ্য আড়াল করে দেয়।
আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে যদি জানতে হয়, আর যা-ই হোক, অফিসিয়াল দলিলে তাকে পাওয়া যাবে না। পরবর্তী সময়ে আমরা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও কিছু দলিল পেয়েছিলাম। কিন্তু পাওয়ার পর সেনাবাহিনীর লোকজনই বলে দিলেন, দলিলগুলোয় ভুল আছে। ফলে ধরে নিতে হয়, দলিলনির্ভর ইতিহাস চর্চা করলেই যে সঠিক হচ্ছে তা না। তখন থেকেই আমার একটা কথা মনে হতো। এত দলিল আমরা পাচ্ছি, কিন্তু সেই সমস্ত দলিলের কোথাও সাধারণ মানুষ নেই। শুধু যারা লিখতে পারে– এ তো তার ইতিহাস হচ্ছে। এই যে প্রাতিষ্ঠানিক তথ্যহীনতা, প্রকারান্তরে এটাই সবচেয়ে বড় অবরোধ। দলিলে কোথাও নারী নেই। কয়েক জায়গায় কিছু নির্যাতনের বর্ণনা আছে, কিন্তু আমার মনে হয়েছে, সেসবের ভেতর বানোয়াট তথ্য আছে। কোনো কোনো দলিলে পেয়েছি পাকিস্তানি আর্মি গিয়ে একশ মেয়েকে তুলে এনেছে। ওই সমস্ত জায়গায় যখন আমরা গিয়েছি, খোঁজ নিয়েছি, জানতে পারি, এমন কিছু ঘটেনি। অর্থাৎ আমরাও কখনও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কখনও তথ্য দিই, কখনও দিইনি। তাহলে ইতিহাস কোথায় থাকে। ভাবনাচিন্তার অবকাশটা কোথায় থাকে।
ভাবনাচিন্তার অবকাশটা থাকে তাদের কাছে, যাদের কাছে তথ্য আছে। তাহলে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য কাদের কাছে আছে? সাধারণ মানুষের কাছে আছে। কিন্তু আমাদের ইতিহাসে আমরা সাধারণ মানুষকে বাইরে রেখে এসেছি। আমরা দলিলে যা পেয়েছি, রাজনীতিকদের কথায় যা পেয়েছি, সেটাকেই আমরা ইতিহাস ভেবেছি। সাধারণ মানুষের ইতিহাসকে আমরা দীর্ঘকাল ইতিহাস জ্ঞান করিনি। আমরা তাকে বলছি ‘নমঃশূদ্রের ইতিহাস’। আমাদের যেন কেবল ব্রাহ্মণের ইতিহাস জানারই প্রয়োজন। নমঃশূদ্রের ইতিহাস জানার প্রয়োজন যেন নেই। এই মনোভাব আমাদের কতখানি কাঠামোগত ও মজ্জাগত! মানুষ বলে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বিভাজনের কথা। তারা পরস্পরের কথা জানতে দেয় না।
আমি মনে করি, এদিকে তাকানোরই প্রয়োজন নেই। মুক্তিযুদ্ধের তথ্য আছে সাধারণ মানুষের কাছে। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে গ্রামে– এ তথ্য অস্বীকার করে কোনো লাভ নেই। বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধা তো গ্রামের। আমরা তাদের কথা কতটা নিই? আমরা নিই সেনাবাহিনীর মানুষদের কথা। তারা বিরাট বিরাট খণ্ডের বই বের করেন। সাধারণ মানুষের যুদ্ধটা কেমন ছিল তা নিয়ে তাদের কোনো বই প্রকাশিত হয়েছে? আমরা যারা বিরোধীপক্ষীয় ইতিহাসবিদ, তারা খানিকটা চেষ্টা করছি। সে জন্য কথাও কম শুনতে হয় না। বলা হয় আমরা আলাদা একটা ইতিহাস গড়তে চাই। আমরা গড়পড়তা যে ইতিহাস চর্চা করি সেটাই কিন্তু মুক্তচিন্তা-বিরোধী। আমরা একাত্তরের ইতিহাসকে যেন ধর্মীয় ইতিহাসে পরিণত করেছি। আমরা যেমন ধর্মের কোনো সমালোচনা করতে পারি না, কারণ ওটা বিশ্বাসের জায়গা। আমাদের কাছে ১৯৭১-ও যেন হয়ে উঠছে তেমনই বিশ্বাসের জায়গা। আমাদের সামষ্টিক এই সংকটের শিকড় বেশ গভীরে।
আর্থসামাজিকভাবে আমরা অতিপ্রাচীন কাল থেকে কৃষিপ্রধান সমাজের অংশ। গ্রাম্য ভাষায় হাইল্লা। হাইল্লা যারা, তারা ধর্মের বেঁধে দেওয়া বিষয়ের অনুসারী। বাঁধা নিয়মের বাইরে, তথ্য দিয়ে যুক্তি দিয়ে যাচাই করে বিচার-বিবেচনাবোধ গড়ে তুলব, এমন মানসিকতা আমাদের নেই। এ কথা প্রযোজ্য বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবার ক্ষেত্রেই। আমরা পুরো ধর্মের আদলে, পীরালি কায়দায় চলি। আমরা একজন-দু’জন পীরের নাম উচ্চারণ করি। তিনিই সব করেছেন। আমাদের ক্রিকেটেও দেখা যায়, যেন তামিম ছাড়া খেলা হবে না, যেন সাকিব ছাড়া খেলা হবে না। অর্থাৎ সংগ্রামের যে গোষ্ঠীগত ইতিহাস, আমরা তাকে স্বীকারই করি না। আমরা মনে করি, ইতিহাস তৈরি হয় ব্যক্তির হাত দিয়ে। সেটা ক্রিকেটেই হোক, কি মুক্তিযুদ্ধেই হোক। তা শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে হোক, কি জিয়াউর রহমানের দ্বারা হোক। এই মানুষগুলো কী ভাবতেন, আমি জানি না। তবে আমি বিশ্বাস করি না, তারা কেউ ভাবতেন, ইতিহাস একজন-দু’জনের দ্বারা সৃষ্ট হয়। কিন্তু আমরা নিজেরা আজ এটাই বিশ্বাস করতে চাই। কারণ, এটাই দুর্বল আমাদের মনে একটা শক্তির বিভ্রান্তি তৈরি করে। এটা ভালো, নাও। এটা খারাপ, ফেলে দাও। যে দেশের মানুষ এত সরল বিচারে চিন্তা করতে বসে, মুক্তচিন্তার অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অর্জন তাদের দ্বারা সম্ভব কিনা– আমি নিশ্চিত নই।
লেখক শিক্ষাবিদ সাহিত্যিক