হাইভোল্টেজ কোয়ালিফায়ার

কোয়ালিফায়ারে মাঠে নামার আগে শেষ প্রস্তুতি নিতে ব্যাট হাতে নেটে যাচ্ছেন খুলনার দুই তারকা মাহমুদুল্লাহ ও সাকিব। পাশের ছবিতে চট্টগ্রামের তারকা ওপেনার সৌম্যের ব্যাটিং অনুশীলন- বিসিবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ | ০১:১০
মিঠুনের কথায় আত্মবিশ্বাসের সুর, কোয়ালিফায়ারকেও লিগের ম্যাচের মতো করে দেখছেন তিনি। লিগের আট ম্যাচের সাতটিতে যেভাবে ফল নিজেদের পক্ষে নিয়েছেন তেমনি আজ প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে টুর্নামেন্টের ফাইনাল নিশ্চিত করতে চান সবার আগে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিকেল সাড়ে ৫টায় মিঠুনের দল ফাইনালে ওঠার মিশনে নামবে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেমকন খুলনার বিপক্ষে।
যাদের বিপক্ষে লিগ পর্বের দুটি ম্যাচ জিতে নিরঙ্কুশ ফেভারিটের তকমা নিজেদের করে রেখেছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। তাই সেরার সঙ্গে দ্বিতীয় সেরার কোয়ালিফায়ার ম্যাচের ভোল্টেজ চূড়ায় থাকলে বিনোদিত হবেন টিভি সেটের দর্শকরাও।
মাঠের পারফরম্যান্স বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপের সেরা দল চট্টগ্রামের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং কোথাও ঘাটতি নেই। কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কৌশল ও বিচক্ষণতা দলের বাড়তি শক্তি। সেটা পরিস্কার করে দিয়েছে মাঠের পারফরম্যান্স। চট্টগ্রামের শক্তির জায়গা বোলিংয়ের পাশাপাশি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের রানে থাকা। তাদের মতো বোলিং বৈচিত্র্য অন্য কোনো দলে নেই। মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে সৌম্য সরকারকে নিয়ে জমাট পেস আক্রমণ।
স্পিন বিভাগে তাইজুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, রাকিবুল হাসানকে নিয়ে অধিনায়ক বোলার পরিবর্তন করতে পারেন ব্যাটসম্যানদের শক্তি-দুর্বলতা অনুযায়ী। কোয়ালিফায়ারেও বোলিংয়ে আস্থা চট্টগ্রামের অধিনায়ক মিঠুনের, 'আমাদের দল এখন পর্যন্ত খুবই ভালো খেলছে। বিশেষ করে বোলিং ধারাবাহিক ছিল। মূল শক্তির জায়গাও বোলিং। টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা রান করছে। আশা করি, কোয়ালিফায়ার ম্যাচেও ধারাবাহিকতা থাকবে। কালকের (আজ) ম্যাচকে আলাদা করে চিন্তা করছি না। আমরা চেষ্টা করব কাল (আজ) জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করা।'
প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলার বড় সুবিধা হলো হারলেও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলতে পারে। দু'দলের জন্যই যেটা বাড়তি সুবিধা। যদিও মিঠুন দ্বিতীয় বিকল্প নিয়ে ভাবছেন না। তাই বলে প্রতিপক্ষ খুলনাকে হালকা করেও দেখছেন না উইকেরক্ষক এ ব্যাটসম্যান, 'ছোট সংস্করণের খেলা একজন দু'জন ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। কাগজে-কলমে ওরা সেরা দল। তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা মাঠে নামব। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে ছন্দটা নিজেদের দিকে রাখা।'
চট্টগ্রামের ওপেনিং জুটিতে লিটন কুমার দাস ও সৌম্য সরকার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। মিডল অর্ডারে মোসাদ্দেক, শামসুর রহমান ভালো করছেন। অলআউট খেলা চট্টগ্রামের লাগাম টেনে ধরা তাই সহজ হবে না তারকায় ঠাসা খুলনার জন্য।
সাকিব, মাহমুদুল্লাহ, মাশরাফি, ইমরুল, জহুরুল, আরিফুল হক, শুভাগত হোমকে নিয়ে খুলনাকে বলতে হয় বিকল্প জাতীয় দল। এই তারকাদের এক-দু'জন জ্বলে উঠলেই ম্যাচ নিজেদের করে নিতে পারেন। যদিও তারকাদের বেশিরভাগই ছন্দে নেই। সাকিব বোলিং ভালো করলেও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ। মাহমুদুল্লাহ, ইমরুল হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। নামে ভারি খুলনার দুর্বলতা ব্যাটিং। সেদিক থেকে দেখলে আজকের প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে নিরঙ্কুশ ফেভারিট চট্টগ্রাম।
তবে নকআউট পর্বের ম্যাচ হওয়ায় খুলনাকে পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। সে কারণেই জয়ের সুযোগ দেখছেন খুলনার ইমরুলও, 'মানসিকভাবে সবাই ?খুব ভালো। কারণ সেমিফাইনাল খেলছি, আমরা দুই নম্বর দল হয়েছি। আমাদের এখানে সুযোগ দুটো থাকবে। হ্যাঁ, চট্টগ্রাম আমাদের দু'বার হারিয়েছে ভালো ক্রিকেট খেলে। ওদের বিপক্ষে যে ভুলগুলো করেছি, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এই ম্যাচে একই ভুল না করলে ভালোভাবে ফিরে আসার সুযোগ থাকবে।' সে যাই হোক, টি২০ ছন্দের খেলা। নির্দিষ্ট দিনে যে দল গুছিয়ে পারফর্ম করতে পারবে বিজয়ের হাসি হাসবে তারাই।