ডিজিটাল হাটে পশু কিনতে পারবেন প্রবাসীরা

বাংলাদেশি প্রবাসীরা এবারে দেশের কোরবানির পশু কেনার সুযোগ পাবেন ডিজিটাল হাটে। ২০২০ সালে করোনা সময়ে প্রথমবার চালু হয় কোরবানির পশু কেনাবেচার ‘ডিজিটাল হাট’। এবারও অনলাইনে জমজমাট পশু বেচাকেনা নিয়ে কাজ করছেন উদ্যোক্তারা।

কমার্শিয়াল স্ট্র্যাটেজি (এটুআই) বিভাগের প্রধান ও একশপ টিম লিডার রেজওয়ানুল হক জামি জানালেন, বর্তমানে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি বা চলাচল সংক্রান্ত সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা বা বিধি-নিষেধ না থাকলেও ক্রেতাদের আগ্রহের কারণে এবার ঈদেও ডিজিটাল হাটে কোরবানি পশু কেনাবেচার ব্যবস্থা থাকছে। মূলত (digitalhaat.gov.bd) সাইট ছাড়াও দেশের অন্যতম গরু বিক্রির প্লাটফর্মগুলো ডিজিটাল হাটের সঙ্গে যুক্ত। উদ্যোগে যুক্ত আছে জেলা পর্যায়ের ফেসবুক ও ওয়েবভিত্তিক পশু বিক্রয়ের প্লাটফর্মগুলো।

ডিজিটাল হাটের প্রথম বছরেই (২০২০ সাল) অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে ২৭ হাজার কোরবানির পশু বিক্রি হয়। পরের বছর ২০২১ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার কোরবানির পশু বিক্রির মধ্য দিয়ে রেকর্ড স্থাপন করে ডিজিটাল হাট প্লাটফর্ম। যার স্বীকৃতিতে ২০২১ সালে উদ্যোগটিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।

২০২২ সালে করোনার প্রকোপ একেবারেই কম থাকার পরেও ডিজিটাল প্লাটফর্মে প্রায় ৬০ হাজার কোরবানির পশু বিক্রি হয়। উদ্যোক্তাদের ধারণা, চলতি বছরে ডিজিটাল হাটে অন্তত ৫০ হাজার কোরবানির পশু বিক্রি হবে। আগের তুলনায় এবারে কম পশু বিক্রি হওয়ার সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে, করোনা-পরবর্তী সময়ে অবাধে চলাচল এবং পশুর দামের তারতম্যের কারণে গতবারের চেয়ে ২০ শতাংশ কম পশু অনলাইনে বিক্রি হবে।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) ব্যবস্থাপনায় এবং সরকারের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্পের একশপ’র কারিগরি সহায়তায় ইতিমধ্যে অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনা করছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও স্থানীয় হাটগুলো যুক্ত আছে এবারের ডিজিটাল হাটে। নতুন করে ডিজিটাল হাটে যুক্ত হয়েছে প্রবাসী ক্রেতাদের জন্য ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে গরু কেনার সুবিধা। সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সাধারণ সম্পাদক (ই-ক্যাব) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল জানালেন, বিগত ৩ বছরে প্রায় ১০ হাজার খামারিকে ডিজিটাল হাটে যুক্ত করেছি। খামারিরা অনলাইনে পশু বিক্রি করেছেন। অনেকে প্রত্যক্ষভাবে সুফল পেয়েছেন। খামারি, অনলাইন উদ্যোক্তা ও কোরবানির পশুর ক্রেতা সবার কথা চিন্তা করেই ডিজিটাল হাট ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে।

ই-ক্যাব অর্থ সম্পাদক আসিফ আহনাফ বললেন, ডিজিটাল হাটের বিশেষ সংযোজন, আমরা এ বছর প্রবাসী ক্রেতাদের জন্য অনলাইনে কোরবানির পশু কেনার সুযোগ রেখেছি। তবে সেটা শুধু মূল প্লাটফর্ম (digitalhaat.gov.bd) সাইট থেকে কেনায় প্রযোজ্য হবে। আগ্রহী ক্রেতা যে জেলার জন্য ক্রয় করবেন সে জেলায় পশুর অবস্থান হতে হবে।

ডিজিটাল হাট উদ্যোগের মাঠ পর্যায়ের সমন্বয়ক ই-ক্যাব নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন জানালেন, ডিজিটাল হাটে পেমেন্টের প্রক্রিয়া হবে, পশু পছন্দ ও দাম নির্ধারনের পরে কর্তৃপক্ষ ক্রেতা ও বিক্রেতাকে ভেরিফাই করে অনলাইন পেমেন্ট লিংক ক্রেতার জন্য প্রেরণ করবেন। লিংকে ক্রেতা পেমেন্ট প্রদান করবেন। বিক্রেতা তার ঠিকানা অনুযায়ী পশু পৌঁছে দেবেন। পুরো বিষয়টি ডিজিটাল হাট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তদারকি করবেন। তাছাড়া স্লটারিং সেবার সুযোগ থাকছে। তবে এটা সম্ভব হবে স্লটারিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান খালি থাকা সাপেক্ষে। যা মূলত আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। উদ্যোক্তারা প্রত্যাশা করছেন, এবারও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীসহ অনেকে ডিজিটাল হাট থেকে পছন্দের কোরবানির পশু কিনবেন।

সরকারের নির্ধারিত বিধি মোতাবেক ডিজিটাল হাট পরিচালনা করা হবে। কোরবানি পশু বিষয়ক শরিয়তের বিধান ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় কাজ করা হবে। উল্লেখিত ডিজিটাল হাট সাইটে বিস্তারিত তথ্য পাবেন আগ্রহী ক্রেতারা।

ডিজিটাল হাট পৃষ্ঠপোষকতা করছে অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ এবং গেটওয়ে সহযোগিতা কাজ করছে ওয়ালেটমিক্স।