ধর্ষণের আলামত নষ্ট
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত কমিটি

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ | ২৩:৩৪
বগুড়ার ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। আলোচিত ধর্ষণ মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে আলামত নষ্ট করেছেন বলে বাদী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব ওসির কাছ থেকে নিয়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে দেওয়া হয়েছে।
ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জালশুকা হাবিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের শিক্ষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুল গত বছরের অক্টোবরে ধুনট পৌর এলাকার দক্ষিণ অফিসারপাড়ায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাস করতেন। ওই বাসার মালিকের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। মুরাদুজ্জামান একদিন কৌশলে তাকে জড়িয়ে ধরে মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন। এরপর ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করেন। গত ১২ মে আবারও জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী চিৎকার দেয়। এ সময় স্বজনরা ছুটে এলে মুরাদুজ্জামান পালিয়ে যান। এরপর ওই ছাত্রীর কিছু অশালীন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন মুরাদুজ্জামান। পরে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধুনট থানায় মামলা করেন। পুলিশ মুরাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার ও অশালীন ভিডিও ধারণকৃত ফোন জব্দ করে। মুরাদুজ্জামান বগুড়া কারাগারে আছেন।
বাদীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৮ মে মুরাদুজ্জামানকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর আরও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করেন ওসি। ওই ফোনে পাওয়া কয়েকটি অশালীন ভিডিও ক্লিপ কপি করে নেন ওসি। এসব চিত্র ও মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানোর কথা। কিন্তু ওসি আলামত নষ্ট করার জন্য ফোন দুটি আদমদীঘি থানার একজন উপপরিদর্শকের কাছে পাঠিয়ে দিলে ফোনে থাকা সব ভিডিও ক্লিপ ও তথ্য মুছে ফেলা হয়। এরপর দুটি মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তদন্ত যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে জন্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্তভার ডিবির কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ফরেনসিক পরীক্ষা ও তদন্তে মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণ পাওয়া গেলে আসামির বিরুদ্ধে আরও মামলা হবে। এ ছাড়া অভিযোগ সত্য হলে ওসির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।