জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেন এসিডে ঝলসে যাওয়া সাদিয়া

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:২৯ | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:২৯
মাদারীপুরের শিবচরে এসিড নিক্ষেপে ঝলসে যাওয়ার ২৫ দিন পর মারা গেছেন সাদিয়া আক্তার (২০)। রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
সাদিয়ার পরিবার জানায়, ৪ বছর আগে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের সিরাজ শিকদারের ছেলে স্পিডবোটচালক সুমন শিকদারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। কিন্তু সুমন মাদকসেবী হওয়ায় প্রায়ই তাদের সংসারে অশান্তি লেগে থাকত। দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করলে সম্প্রতি তাদের তালাক হয়ে যায়। এরপরও সুমন দফায় দফায় সাদিয়ার বাবার বাড়িতে হামলা চালাত। এ নিয়ে সাদিয়া শিবচর থানায় অভিযোগ করেন। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে সুমন।
ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই সাদিয়ার অন্যত্র বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গত ১৬ আগস্ট রাত ১০টার দিকে সুমন তার কয়েক বন্ধুকে নিয়ে সাদিয়ার বাড়িতে যায়।
এ সময় সাদিয়ার মাথায় এসিড ঢেলে দেয় সুমন ও তার সহযোগীরা। এতে সাদিয়ার মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। পরে স্বজনরা সাদিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠান। সেখানে শনিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। রাতে সাদিয়ার লাশ বাড়িতে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
এদিকে সাদিয়াকে এসিড নিক্ষেপের পরদিন তার বোন তাছলিমা বাদী হয়ে সুমনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। ২৪ আগস্ট রাতে সুমন শিকদারকে শরীয়তপরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরচর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার বাদী সাদিয়ার বোন তাছলিমা বলেন, ‘২৫ দিনে আমার পরিবারের বেশ কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে বোনের চিকিৎসায়। এর পরও মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয়েছে। আমার বোনকে এসিড নিক্ষেপ করে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি দাবি করছি।’
শিবচর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এসিড নিক্ষেপে আহত সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন।
- বিষয় :
- এসিড নিক্ষেপ
- মৃত্যু
- সাবেক স্বামী
- ঢাকা
- মাদারিপুর
- শিবচর