ফরিদপুরে মাছ শিকারে নিষিদ্ধ উপকরণ

নিষিদ্ধ চায়না জাল নিয়ে ফরিদপুরে পদ্মায় নামছেন দুই মৎস্যজীবী। ছবি: সমকাল
ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:৩৭ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০৯:৩৭
পদ্মা, মধুমতী, আড়িয়াল খাঁ, কুমারসহ ফরিদপুরের বিভিন্ন নদী ও খালে চলছে নিষিদ্ধ চায়না জাল ও দুয়ারী দিয়ে মাছ শিকার। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে মৎস্যজীবীদের অনেকেই প্রকাশ্যে এসব উপকরণ ব্যবহার করছেন।
ছোট ও মা-মাছ ধরার ফলে প্রতিবছরই মাছের পরিমাণ কমে আসছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, এসব উপকরণের সহজলভ্যতার কারণেই জেলেরা উৎসাহিত হচ্ছেন ব্যবহারে।
এদিকে, জেলেরা আইনত দণ্ডনীয় জেনেও এসব উপকরণ ব্যবহারে অজুহাত দেখাচ্ছেন জীবিকার। তাদের দাবি, বর্ষা মৌসুমে তাদের জন্য বিকল্প পেশার ব্যবস্থা বা প্রণোদনার।
ফরিদপুরের দুর্গম পদ্মার চর ভাঙ্গীডাঙ্গী এলাকার মৎস্যজীবী মহাতাব আলী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বর্ষার সময় খ্যাত খোলায় পানি ওঠে, কৃষিকাজ বন্ধ। তাই এই সিজনে নদীর মাছ ধইরাই আমরা চরের লোক বাঁচি। এহনতো নদীতে মাছ কইমা গেছে, ফাঁকা জালে সারাদিনেও মাছ বাধে না, চায়না জালে তাও কিছু মাছ পওয়া যায়।’
একই এলাকার ট্রলারের মাঝি সোহন শেখ জানান, বিস্তীর্ণ চর এলাকার বেশিরভাগ পরিবারই বর্ষা মৌসুমে নদীর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রধান উপকরণ নিষিদ্ধ চায়না জাল ও দেয়ারী। এই জাল ঘন হওয়ায় মাছের পোনাও আটকায় তাতে। প্রতিদিন সকালে সাড়ে আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত ডিক্রিরচরের ধলার মোড়ে পথের পাশে বসে অস্থায়ী মাছের হাট। চরবাসী ট্রলারে নদী পার হয়ে এসে ওখানে নানা জাতের ও আকারের সুস্বাদু মাছ বিক্রি করেন। ওই মাছ ডাকে কিনে নিয়ে মাছ ব্যবসায়ীরা ফরিদপুর শহরের শরিয়তুল্লাহ বাজার ও টেপাখোলা বাজারে নিয়ে যান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, ‘সম্প্রতি ব্যবহার হওয়া চায়না জাল ধ্বংস করতে কাজ করছে সরকার, চালানো হচ্ছে অভিযান।’
দেদারসে এসব উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যে প্রতিনিয়ত পদ্মা, মধুমতী, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, চন্দনাসহ বড় নদীগুলোতে আড় বাঁধ ভেঙে দিতে ও চায়না জাল জব্দ করতে চলছে অভিযান।’
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নদ-নদী বেষ্টিত এই জেলায় ১৫ হাজারের বেশি মৎস্যজীবী রয়েছেন। চলতি বছরে মাছের চাহিদার তুলনায় উদ্বৃত্ত উৎপাদন ৮৪৪ মেট্রিক টন।