ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

দণ্ডপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান বাচ্চু শেখ। ছবি: সমকাল

ফরিদপুর অফিস

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫ | ২০:১৫

ফরিদপুরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী আসাদুজ্জামান বাচ্চু শেখ (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুর ১টায় ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন রায় প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আসাদুজ্জামান ওরফে বাচ্চু শেখ উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার কানাই মাতুব্বর পাড়ার ছাত্তার শেখের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর ফরিদপুর জেলা সদরের দ্বিরাজতুল্লাহ মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার এমবিএ নামক একটি মুরগির খামারের ঘর থেকে শান্তার মরদেহ উদ্ধার করেন কোতোয়ালী থানা পুলিশ। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ওই খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার পর স্বামী বাচ্চু শেখ ওই খামার থেকে পালিয়ে যান। এর দু’দিন পর কোতোয়ালী থানায় বাচ্চু শেখকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা জরিনা বেগম।

আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য শান্তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আসছিল স্বামী আসাদুজ্জামান বাচ্চু শেখ। একপর্যায়ে শান্তাকে ডিভোর্সও দিয়ে দেন। কিছুদিন পর নিজের ভুল হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে শান্তাকে পুনরায় বিয়ে করেন। এরপর তারা ওই মুরগির খামারে কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু যৌতুকের জন্য পুনরায় বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালাতে থাকেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর আসামি তাকে ফোন করে জানান তার মেয়ে খুব অসুস্থ। এরপর রাতে আর ফোন রিসিভ না করলে পরেরদিন ওই এলাকায় এসে তালাবদ্ধ ঘরে তার মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন।

ঘটনার পর আসামি পালিয়ে গেলেও ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং একই বছরের ১৬ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুজন বিশ্বাস ও জাহাঙ্গীর আলম।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম রব্বানী ভুঁইয়া রতন বলেন, ১০ জনের সাক্ষ্যর ভিত্তিতে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। আমরা এই আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করছি। এই রায়ের মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে যে- যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও হত্যা করে পার পাওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন

×