ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেল ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে

কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেল ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে

স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও চারজনকে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সংগৃহীত ছবি

কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি ও ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫ | ২১:৪১ | আপডেট: ০১ জুন ২০২৫ | ২২:১০

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকের ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে কুলিয়ারচর বাজারে হাবিব কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সমকালকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব।

অসুস্থ ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- ব্যাংক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, কর্মাচারী সিয়াম রহমান, কর্মকর্তা হোসনা বেগম, ম্যানেজার সৌমিক জামান খান, কর্মকর্তা মেরিন আক্তার ও সিকিউরিটি গার্ড কামাল মিয়া।

স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, আজ রোববার দুপুর দেড়টায় হঠাৎ কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকে কয়েকজন গ্রাহক এসে দেখতে পান ব্যাংকের ভিতর ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী অসুস্থ বোধ করছেন। এসময় তারা বমিও করছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, ব্যাংকের মধ্যে ‘বিষাক্ত দুর্গন্ধ’ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। ধীরে ধীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অজ্ঞান হয়ে যায়। এসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও চারজনকে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা দুইজনকে কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে তারা দুইজনও বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। বর্তমানে তারা ৬ জনই বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ ভুলন জানান, ‘৬ কর্মকর্তা দিয়ে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়। এদের মধ্যে ২ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ। ব্যাংকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিষাক্ত গ্যাসে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আমরা এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। তবে যতটুকু বুঝতে পেরেছি ব্যাংকে কোনো লুটপাট হয়নি।’

এ বিষয়ে আরেক ব্যাবসায়ী কামরুল ইসলাম মুছা বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এসে সিয়াম ও হোসনা নামের দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবস্থার অবনতি দেখলে তাদের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।’

এ বিষয়ে ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমিসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কুলিয়ারচর থানা পুলিশ ও বাজিতপুর ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসেন। এখানে এসে কয়েকজন কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পারি এখানে কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। তবে ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে। ব্যাংকটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, ‘বাজিতপুর আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-শাখা কুলিয়ারচর ব্যাংকটি। দুপুরে যে কোনো এক সময় ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা অজ্ঞান হয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তারা ভর্তি রয়েছেন। যতটুকু জানতে পেরেছি তাদের অক্সিজেন লেভেল কমতে শুরু করেছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের অক্সিজেন দিলে কিছুটা সুস্থ হন। তবে তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে তাদের কী ধরনের চেতনানাশক দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংক তালাবদ্ধ করে রেখেছে খোলার পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

আইএফআইসি ব্যাংকের বাজিতপুর শাখার সেকেন্ড অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, ব্যাংকে কোনো লুটপাট হয়নি। হিসাব করে সব কিছু ঠিকঠাক পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন

×