বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে খাদ্যের ডিলারশিপ বিক্রির অভিযোগ

ম্যাপ
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫ | ০৩:৫১
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকনের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে এমন অভিযোগ তোলেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর। অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার বিকেলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা।
যুবদল নেতা সাগর ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘রায়পুরা উপজেলার যে সকল নেতা ৫০ হাজার, ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খাদ্যের ডিলারশিপ লাইসেন্স বিক্রি করেছেন, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।’ এই পোস্টে কয়েকজন তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। আশিক আহমেদ নামে একজন লিখেন, ‘একদিন উপজেলায় গেছিলাম, আমার কাছে ১ লাখ টাকা চাইছে। আপনি পরিচিত দেখে মনে হয় ৫০ হাজার চাইছে, ৫ জন নেতার এক সিন্ডিকেটে।’
আসাদুজ্জামান আসাদ নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘৫ তারিখের (গত বছরের ৫ আগস্ট) পরে রায়পুরার কিছু সিনিয়র নেতাদের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয় আগেই ভালো আছিলাম।’
ফেসবুক পোস্টের ব্যাপারে যুবদল নেতা মোশাররফ হোসেন সাগর সাংবাদিকদের জানান, বিগত সময়ের নির্যাতিত কিছু দলীয় নেতা ডিলারশিপের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তাদের বঞ্চিত করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের একটি অংশকে ডিলারশিপের জন্য নাম দেওয়া হয়। এই ডিলারশিপের জন্য ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে টাকা চাইলে স্পষ্ট করে বলে দিই– ১০ পয়সা খরচ করেও লাইসেন্স নেব না।’ তাঁর ভাষ্য, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিয়োগ প্রকল্পের সভাপতি রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা। তিনি স্বাধীনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেননি দলীয় নেতাকর্মীর চাপের কারণে। এই সিন্ডিকেটে কাজ করেছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকনসহ উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের কয়েক নেতা। আব্দুর রহমান খোকন টাকা ছাড়া কিছু বোঝেন না।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন বলেন, ‘সাগর বিকারগ্রস্ত লোক। কারও কাছে টাকা নেব– এটা চিন্তা করাই ভুল। পাপ হবে এই কথা বললে। আমি ইউএনওর কাছে কোনো নাম দিইনি। আমি সব বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করি। সাগর নিজের নামে না করে আরেকজনের নামে চুক্তিতে আবেদন করছে। এখন তার নাম না থাকায় টাকা পাবে না বলে এসব করছে।’
এ ব্যাপারে ইউএনও মাসুদ রানার ভাষ্য, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে ১১৫টি আবেদন পড়েছে। উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নে ৪৮ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হবে। এই ডিলার নিয়োগে তাদের অগোচরে অনেক কিছু হয়েছে, যা নিয়ে অভিযোগ আসছে। যার কারণে ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে। অনিয়মের ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে অফিস খোলা হলে।
- বিষয় :
- নরসিংদী