ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

বিরোধ ছাত্রদলে ভুগছে সাধারণ মানুষ

বিরোধ ছাত্রদলে ভুগছে সাধারণ মানুষ

জেলা কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে শরীয়তপুরে সড়ক অবরোধে ছাত্রদলের একাংশ। বুধবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গি এলাকায়। ছবি: সমকাল

 শরীয়তপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫ | ০৪:২৭

শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিল চেয়ে সংগঠনটির একাংশের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ নিয়ে তারা টানা ১৫ দিনের মতো কর্মসূচি পালন করেন। গতকাল বুধবার দুপুরে সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের চৌরঙ্গি এলাকায় ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে বসে পড়েন। এতে দুই পাশে চার কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন হাজারো মানুষ।

জানা গেছে, ৩ জুন শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের ৩৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে এইচ. এম জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক ও সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিব করা হয়। 

এর প্রতিবাদে সেদিন থেকেই বিক্ষোভ শুরু করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, সদ্যঘোষিত কমিটিতে ত্যাগী ও মাঠ পর্যায়ের নেতারা বাদ পড়েছেন। পদ পেয়েছেন বিবাহিত, সন্তানের বাবা, অছাত্র, বহিরাগত ও কেন্দ্রঘেঁষা লোকেরা। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে তারা আগেও আন্দোলন করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপের ঘোষণা না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে আবারও আন্দোলনে নামেন।

বিক্ষোভকারী পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর রহমান। তাঁর ভাষ্য, কমিটির আহ্বায়ক এইচএম জাকির আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে গঠিত বাসমালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। তাঁর এক ভাই শ্রমিক লীগের নেতা, আরেক ভাই যুবলীগের নেতা, ভাতিজা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। ওই কমিটিতে বিদ্যুৎমিস্ত্রি, জজকোর্টের আইনজীবীর সহকারী ও অছাত্রদের রাখা হয়েছে। এমন কমিটি তারা মানেন না। কমিটি বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বুধবারের বিক্ষোভে দুর্ভোগে পড়েন শরীয়তপুর সদরের শৌলপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ইলিয়াস মৃধা। তিনি বলেন, নানি শ্বাসকষ্টের রোগী। তাঁকে দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় অবরোধ থাকায় আধা ঘণ্টা ধরে ইজিবাইকে বসে ছিলেন। এখান থেকে হাসপাতাল মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা। শ্বাসকষ্টের রোগী নানিকে নিয়ে হেঁটেও যেতে পারছিলেন না।

এক অ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, একজন রোগীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নিতে হবে। পার্কিং থেকে সদর হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। ৪০ মিনিট ধরে যানজটে পড়ে ছিলেন। 

জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক এসএম জকির বলেন, ‘কমিটি গঠনের পর একটি পক্ষ বিরোধিতা করে আসছে। তাদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছিলাম। তারা না শুনে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়– এমন বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছেন।’ 

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন কালুর ভাষ্য, ‘ছাত্রদল এখন আমাদের কথা শোনে না। তারা কেন্দ্রীয় কমিটির নিয়ন্ত্রণে চলে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে আহ্বান জানাব, দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানের।’ ছাত্রদলের নামে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার কর্মসূচি না দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। 

পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবির হোসেন বলেন, ছাত্রদলের একটি কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর তারা যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। এ সময় পথচারীদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

আরও পড়ুন

×