যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

স্মৃতি রাণী দাস
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫ | ২০:০০
নরসিংদীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। নরসিংদী শহরের দত্তপাড়া পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় গতকাল শনিবার রাতে স্বামী শংকর চন্দ্র দাসের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে নরসিংদী শহরের ঘোড়াদিয়া-সংগীতা এলাকার জন্টু চন্দ্র দাসের মেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় দত্তপাড়া এলাকার যোগেশ চন্দ্র দাসের ছেলে শংকর চন্দ্র দাসের। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শংকরকে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, স্বর্ণলংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেয় কনেপক্ষ। এরপরও শংকর প্রায়ই তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্মৃতির পরিবার মাঝে মধ্যে টাকা দিতো। এতেও তার মন ভরেনি। এক পর্যায়ে আরও দুই লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এতে স্মৃতি রাণী দাস আর কোনো টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে জানালে নির্যাতন চালায় শংকর চন্দ্র দাস। এই নির্যাতনের কথা স্মৃতি রাণী তার মাকে মোবাইল ফোন করে জানান। পরে মেয়ের জামাই শংকরকে জিজ্ঞেস করতে বার বার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। শনিবার রাতেও স্মৃতি রাণীকে মারধর করেন স্বামী শংকর। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই গৃহবধূ। পরে বাড়ির লোকজন স্মৃতি রাণীকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর শংকর রাত ১০টার দিকে ফোন করে তার শাশুড়িকে বলেন, ‘আপনার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
খবর পেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের পরিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ সময় স্বামী শংকর চন্দ্র দাস হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে স্মৃতি রাণার পক্ষের লোকেরা ধরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে রাতেই থানায় নিয়ে যায়।
আজ রোববার নরসিংদী জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর স্মৃতি রাণী দাসের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নরসিংদী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোমান সাদেকিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী শংকর চন্দ্র দাসকে আটক করা হয়েছে। থানায় মামলা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- যৌতুক
- পিটিয়ে হত্যা
- নরসিংদী