ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই, মাদকাসক্ত তরুণ আটক

চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই, মাদকাসক্ত তরুণ আটক

আটক জুয়েল রানা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২০ | ০১:২৬

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এক রিকশাভ্যান চালককে হত্যার অভিযোগে জুয়েল রানাকে (২০) নামের এক তরুণকে আটক করেছে থানা পুলিশ। সোমবার রাত ২টায়   উপজেলার কুশলপুর খেলার মাঠ থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক জুয়েল রানা একই উপজেলার বলিভদ্রপুরের সামসুল আলমের ছেলে । তিনি বলিভদ্রপুর এমএম দাখিল মাদ্রাসার ৮ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

নিহত ওই ভ্যানচালকের নাম হাছেন বাবু। তার বাড়ি ওই উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর নিজবাড়ি থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশাভ্যানটি নিয়ে বের হন হাছেন বাবু। অনেক রাতেও বাবু বাড়িতে না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন। পরের দিন পাশের গ্রাম বড়নগর বলিভদ্রপুরের জুয়েলের কলাবাগানে এক মরদেহের সন্ধান পান তারা। পরে সেখানে  গিয়ে তারা বাবুর দেহ শনাক্ত করেন। ওইদিনই নিহত হাছেন বাবুর চাচা আব্দুর রউফ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি ফুলবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ কুমার রায় বলেন, মামলা মামলা দায়ের পর থেকেই হাছেন বাবুর হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত ছিল। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গত সোমবার রাত ২টায় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত জুয়েল রানাকে আটক করা হয়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল আমিনের কাছে আটক জুয়েল রানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করেন।

স্বীকারোক্তিতে জুয়েল রানা জানান, তিনি ও তার সহযোগীরা নিয়মিত নেশা করেন। নেশার টাকা জোগাড়ে ছোটখাটো চুরেও করেন। মোটা অঙ্কে নেশার টাকার জন্য জুয়েল ও মূল হত্যাকারী হাছেন বাবুকে খুন করে রিকশাভ্যানটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ অক্টোবর রাত ৮টায় রিকশাভ্যান চালক হাছেন বাবুকে বিরামপুর উপজেলায় যাওয়ার কথা বলে ভাড়া করেন জুয়েল। পথে বড়নগর বলিভদ্রপুর ভাটপাড়ি এলাকায় কলার বাগানের কাছে ভ্যানটি পৌঁছলে যানটি থামিয়ে হাছেন বাবুকে নেশা করার প্রস্তাব দেন জুয়েল। সেখানে পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন মূল হত্যাকারী। জুয়েল কলাবাগানের ভিতরে হাছেন বাবুকে নিয়ে যায় এবং সেখানে বসে মূল হত্যাকারীসহ হাছেন বাবু ও জুয়েল আড্ডা দেন এবং মাদক সেবন করেন। আড্ডার এক পর্যায়ে হাছেন বাবুকে পেছন থেকে মাথায় কুড়াল দিয়ে কোপায় মূল হত্যাকারী। তার গলায়ও কোপানো হয়। পরে হাছেন বাবুর মৃত্যু নিশ্চিত করে জুয়েল ও হত্যাকারী নিহতের ভ্যানটি নিয়ে বিরামপুর উপজেলায় পালিয়ে যান। পরের দিন ভ্যানটি বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে একটি গ্যারেজে সেটা রেখে পালিয়ে যান জুয়েলসহ মূল হত্যাকারী।

থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিকশাভ্যান চালক হাছেন বাবু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত জুয়েল রানাকে আটক করা হয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল আসামিকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন

×