বসুরহাটে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আ’লীগের মেয়র প্রার্থীর সড়ক অবরোধ

সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও সমর্থকরা- সমকাল
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ | ১০:৪০ | আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ | ১১:৩০
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা। এ দাবিতে তিনি ও তার সমর্থকেরা ঝাড়ু মিছিল, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বসুরহাট জিরো পয়েন্ট বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ কর্মসূচি শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচির কারণে পৌর এলাকায় যানবাহন চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
কর্মসূচি চলাকালে দেওয়া বক্তব্যে আবদুল কাদের আওয়ামী লীগের একাধিক সাংসদ ও জেলা নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ তোলেন। তিনি নিজ দলীয় নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন।
বসুরহাট পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহন করা হবে ১৬ জানুয়ারি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, নির্বাচন উপলক্ষে রোববার সকাল ১০টায় নির্বাচনী আচরণবিধি মানার বিষয়ে সভার আয়োজন করে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়। জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর। সভাপতিত্ব করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল আলম। সভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরসহ তিনজন প্রার্থী এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অঙশ নেওয়া কয়েকজন জানান, আবদুল কাদের মির্জা সভায় তার বক্তব্যের একপর্যায়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ করেন। এর নেপথ্যে দলের কিছু নেতার ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক জানতে চান, আর কিছু বলবেন কি না? তখন আবদুল কাদের বক্তব্যে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সভা থেকে বেরিয়ে যান।
সভা থেকে বেরিয়ে আবদুল কাদের পৌর কার্যালয়ে গিয়ে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে হইচই করেন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে তার বাড়িতে নেওয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি পৌর শহরের জিরো পয়েন্টে বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান নেন। পরে সেখানে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক হাজির হন। তারা টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ডিসি ও এসপির অপসারণ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিকেল ৫টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী বসুরহাট জিরো পয়েন্টে যান। তিনি আবদুল কাদের মির্জাকে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার পাশাপাশি জেলা কমিটি নিয়ে করা অভিযোগ নির্বাচনের পর বসে মীমাংসার আশ্বাস দেন। এরপর আবদুল কাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এরপর সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, 'সভা চলার সময় হঠাৎ করে সরকার দলীয় প্রার্থী ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেছেন।'
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খাঁন বলেন, সভায় নৌকার প্রার্থী দীর্ঘ সময় নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি সভার এজেন্ডার বাইরে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে কথা বলছিলেন এবং একই কথা বারবার বলছিলেন। এজন্য তিনি প্রার্থীর উদ্দেশ্য বলেন, 'আপনার আর কোনো কথা আছে কি না? একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বক্তব্য অসমাপ্ত রেখে ক্ষুব্ধ হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।'