গবেষণা
বুড়িগঙ্গার প্রকৃত দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার
৩০ বছরে জলাভূমি কমে দাঁড়িয়েছে ৭.১৭ শতাংশে

মঙ্গলবার রাজধানীতে ‘বুড়িগঙ্গা : নিরুদ্ধ নদী পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অতিথিরা- সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৪ | ১৪:০৬ | আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ | ১৫:২৭
সরকারি-বেসরকারি নথিপত্র থেকে উইকিপিডিয়াসহ সব জায়গায় বুড়িগঙ্গার উৎপত্তিস্থল হিসেবে ‘তুরাগ’ নদকে বলা হয়ে আসছে; যা মূলত ‘ধলেশ্বরী’ নদী হবে। আবার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বলছে বুড়িগঙ্গা নদীর প্রকৃত দৈর্ঘ্য ২৯ কিলোমিটার, বিআইডব্লিউটিএর হিসাবে ৪৫ কিলোমিটার এবং পর্যটন করপোরেশনের হিসাবে ২৭ কিলোমিটার। কিন্তু এসব তথ্য ভুল। এক গবেষণায় জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রকৃত দৈর্ঘ্য নিরূপণ করে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জের হযরতপুরের ধলেশ্বরীর উৎপত্তিস্থল থেকে কোন্ডা ইউনিয়নের জাজিরা পর্যন্ত বুড়িগঙ্গার দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার।
মঙ্গলবার রাজধানীর শুক্রাবাদে অবস্থিত দৃক ভবনে আয়োজিত ‘বুড়িগঙ্গা : নিরুদ্ধ নদী পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। গবেষণা কার্যক্রমের প্রধান দেশের নদনদীবিষয়ক সংগঠন ‘রিভারাইন পিপল’র মহাসচিব ও দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক শেখ রোকন প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
‘দৃক পিকচার লাইব্রেরি’ এবং ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি’ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বুড়িগঙ্গা নদী নিয়ে বিস্তর গবেষণার উদ্যোগ নেয়। গত বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত চলা এই গবেষণা কার্যক্রমে সহযোগিতা করে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), রিভারাইন পিপল, বেলা, দ্য ডেইলি স্টার ও পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯০ সালে বুড়িগঙ্গার প্রায় ১৩ শতাংশ এলাকা জলাশয় বা জলাভূমি ছিল, যা ২০২০ সালে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে দাঁড়ায়। বুড়িগঙ্গার দুই তীরঘেঁষে রয়েছে ২৫০টি স্থাপনা; এর মধ্যে ১০৮টি কারখানা, ৪৩টি শিপইয়ার্ড, ২৩টি মিল, ২২টি শিল্প স্থাপনা, ১৯টি গুদাম ও ১৭টি ইটভাটা।
গবেষক ও লেখক শেখ রোকন বলেন, প্রথমত আমাদের চেষ্টা ছিল বুড়িগঙ্গা নদীর অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতি জানা এবং এটি কীভাবে পুনরুদ্ধার সম্ভব। মূলত এ থেকে ১৪টি প্রধান দিক উঠে এসেছে; যার মধ্যে কয়েকটি দিক বুড়িগঙ্গাবিষয়ক গবেষণাগুলোতে কখনও উঠে আসেনি। আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণবিষয়ক গবেষক ও লেখক পাভেল পার্থ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।