ধর্ষণের শিকার শিশুটির ছবি ও ভিডিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৫ | ১২:১৩ | আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫ | ১৬:৪৬
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির ছবি ও ভিডিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম ও অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (বিটিআরসি) তাৎক্ষণিক এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন। তিনি শিশুটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আবেদন জানান। আদালত এ বিষয়ে আজই আদেশ দেবেন বলে পরে জানান এই আইনজীবী।
এরআগে, শনিবার শিশুটির মা ঢাকা থেকে স্বামী ও বড় মেয়েকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দিন রাতে বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি হিটুর স্ত্রী ও আরেক ছেলেও জানেন। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে হিটু শেখের ছেলে সজিবের বিয়ে হয়। এরপর থেকে বড় মেয়েকে তার শ্বশুর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ওই পরিবারের সবাই জানলেও কেউ প্রতিবাদ করেননি। ওই বাড়িতে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুর থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে গত পহেলা মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।
এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাদী উল্লেখ করেন, গত বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু বড়বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোল-তাবোল বকছে। এরপর সকাল ছয়টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই দরজা খুলে দিলে তার বাবা (হিটু শেখ) মুখ চেপে ধরে তাকে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষে মেঝেতে ফেলে যায়।
শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
অবস্থার আরও অবনতি হলে বিকেলে তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।
- বিষয় :
- হাইকোর্ট
- ধর্ষণের শিকার
- বিটিআরসি