উত্তরের মানুষের ফিরতি যাত্রাতেও ভোগান্তি
যমুনা সেতুতে যানজটে নাকাল, ট্রেনে-লঞ্চে উপচে পড়া ভিড়

ঈদের ছুটি শেষ। আজ রোববার কর্মদিবস শুরু। গ্রাম থেকে শহরে ফিরছে মানুষ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌবন্দর ও ঘাটে নেমেছিল কর্মস্থলমুখী মানুষের ঢল। শনিবার রাতে বরিশাল নৌবন্দর থেকে তোলা সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫ | ০১:০৭ | আপডেট: ১৫ জুন ২০২৫ | ০৯:৪১
ঈদযাত্রার মতো ভোগান্তি হয়েছে ফিরতি যাত্রাতেও। টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি শেষে আজ রোববার অফিস-আদালত খুলছে। এর আগের দিন শনিবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে সড়ক পথে ঢাকামুখী যাত্রীদের টানা দ্বিতীয় দিনের মতো যানজটে নাকাল হতে হয়। যমুনা সেতুর টোল প্লাজার পশ্চিম প্রান্তে দিনভর গাড়ির জট ছিল ১৫-২০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
ঈদের দুই দিন পর থেকে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ থাকলেও গতকাল রাজধানীর গাবতলী, যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে নামে মানুষের ঢল। বিমানবন্দর ও কমলাপুর রেলস্টেশনে উত্তরবঙ্গ এবং ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে আসা ট্রেনে ছিল ‘বাদুরঝোলা ভিড়’। সদরঘাটে আসা লঞ্চেও ছিল যাত্রীর চাপ।
একাধিক বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ফিরতি যাত্রায় পরিবহন সংকট, যানজট এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। দিনাজপুর থেকে ঢাকায় ফেরা বেসরকারি চাকরিজীবী এনামুল হক বলেন, সকাল ৮টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও এসেছি দুপুর সাড়ে ১২টায়। যমুনা সেতুতে পাঁচ ঘণ্টা নষ্ট হয়েছে। চার লেনের গাড়ি এসে দুই লেনে আটকে যাচ্ছে। তীব্র গরমে যাত্রা আরও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ঈদে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় ১৭ ঘণ্টা এবং ফিরতে ১৫ ঘণ্টা লেগেছে। যমুনা সেতুতে টোলের কারণে বাড়তি সময় লেগেছে। হয় সেতু টোলমুক্ত করা উচিত, নয়তো বুথের সংখ্যা তিন গুণ করতে হবে।
যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকায় ফেরা প্রতিটি বাসই যাত্রীতে পূর্ণ। টার্মিনালে ভিড় করা অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে যানজট ছিল যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা পর্যন্ত।
যাত্রাবাড়ী থানার ট্রাফিক সার্জেন্ট আল আমিন বলেন, জুমার নামাজের পর বাইরে থেকে পরিবহন বেশি আসছে। শনিবারও সেই চাপ আছে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের তথ্যসেবা কেন্দ্রের জোবায়ের হোসেন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১৬টি ট্রেন কমলাপুর পৌঁছেছে। এর মধ্যে বুড়িমারী, রংপুর এক্সপ্রেস ও একতা এক্সপ্রেস– এই তিনটি ট্রেন দেরিতে এসেছে। সব ট্রেনই যাত্রীবোঝাই করে ঢাকায় ফিরেছে।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর থেকে করটিয়া পর্যন্ত সারাদিন যান চলেছে থেমে থেমে। শনিবার ভোর থেকে কয়েকটি দুর্ঘটনা এবং যানের অতিরিক্ত চাপের কারণে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় গতি উঠাতে পারেনি গাড়িগুলো।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় শনিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড়ে অভি বাস কাউন্টারের পাঁচটি বাস ভাঙচুর
করে বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, কড্ডা থেকে চান্দুরার ভাড়া ২০০ ও ঢাকার ভাড়া ৩০০ টাকা। কিন্তু অভি পরিবহন ৮০০ থেকে হাজার টাকা দাবি করছে। তবে পরিবহনটির ম্যানেজার মিলন হোসেন বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকার ভাড়া ৩৫০ টাকা। ঈদের কয়েক দিন ৪০০ টাকা নিচ্ছি।
- বিষয় :
- ভোগান্তি