ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলার অভাবে বীমায় আস্থা কমছে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলার অভাবে বীমায় আস্থা কমছে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। ফাইল ছবি

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ | ০০:১৮

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেছেন, টাকার অঙ্কে বীমার আকার সামান্য বাড়লেও জিডিপির তুলনায় প্রতিবছর কমছে। এর অন্যতম কারণ আর্থিক শৃঙ্খলা তথা করপোরেট গভর্ন্যান্স ও স্বচ্ছতার অভাব। জীবন বীমা দাবির একটি অংশ অপরিশোধিত রয়ে যাচ্ছে। এতে বীমার প্রতি ক্রমাগত মানুষের আস্থা কমছে। এ খাতকে এগিয়ে নিতে আস্থা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

রোববার জীবন বীমা করপোরেশনের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জীবন বীমা করপোরেশনের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকে বক্তব্য দেন। সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে করপোরেশনের উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে গতকাল পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান জানান, ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী জীবন বীমা খাতে ৬৬ শতাংশ বীমা দাবি পরিশোধ হয়েছে। বাকি ৩৪ শতাংশ দাবি অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে। জীবন বীমা করপোরেশন অবশ্য ৮৭ শতাংশ বীমা দাবি পরিশোধ করছে। ১৩ শতাংশ দাবি পরিশোধ করতে না পারা অপ্রত্যাশিত। দাবি পরিশোধ পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারলে এ খাতের ভাবমূর্তি বাড়বে। স্বচ্ছতা বাড়াতে অটোমেশনে জোর দিতে হবে। নতুন নতুন পণ্য চালু এবং দাবি পরিশোধের মাধ্যমে এ খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, বীমা সম্পূর্ণ একটি আস্থার বিষয়। বীমা শুরুর পর জীবন বীমা করপোরেশনের ৭৩ শতাংশ এবং সামগ্রিক বীমা খাতের ৫৫ শতাংশ শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়াম দিলেও বাকিরা এক-দুই বছর দিয়ে আর দিচ্ছে না। এটি মারাত্মক বিষয়। তাঁরা পরে বীমার প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করছেন।

জীবন বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রযুক্তি ও দক্ষতার মাধ্যমে জীবন বীমা করপোরেশনকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। এখন আমরা ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছি। যখন ৬০ বছর বা শতবার্ষিকী পালন হবে, তখন হয়তো আমাদের অনেকে থাকবেন না। তবে তখন যেন আরও সুনামের সঙ্গে এ প্রতিষ্ঠান অবস্থান করে নিতে পারে।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বীমা খাতের বৈশ্বিক গড় আকারের তুলনায় আমরা ১৪ গুণ পিছিয়ে আছি। অর্থনীতির জন্য এটি সুখকর নয়। বৈশ্বিক গড়ের কাছাকাছি যেতে পারলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান বাড়বে। বীমা খাতের উন্নয়নে সরকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এটি ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারলে এ খাত অনেক এগিয়ে যাবে।

সভাপতির বক্তব্যে জীবন বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, জীবন বীমা করপোরেশনের বীমা দাবি পরিশোধ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এখনও নানা কারণে দাবি পরিশোধে দেরি হয়।

‘অনেক সময় আঞ্চলিক অফিসে আবেদন পড়ে থাকে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে দ্রুত দাবি নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। তবে তাদের অফিসে স্ক্যানারের স্বল্পতা আছে। যে কারণে মৃত্যু দাবি পরিশোধে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, বর্তমান স্ক্যানারে চেহারা বোঝা যায় না। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

তিনি জানান, জীবন বীমা করপোরেশনকে আরও পরিচিত করতে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ট্রাফিক পুলিশ, চৌকিদার, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাঝে এক হাজার ছাতা বিতরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×