বহুমুখী প্রতিভাবান

মোহীত উল আলম
মাহমুদ হাসান
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ | ১২:০০ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ | ১৬:০৩
মোহীত উল আলম একজন কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ। সদালাপী, বিনয়ী, নীতিনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মোহীত উল আলমের জন্ম চট্টগ্রামে, ১৩ ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে। তিনি শেক্সপিয়রের ওপর পিএইচডি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ অনার্স ও মাস্টার্স পাস করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগেই প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ১৯৭৮ সালে। ইংরেজিতে দ্বিতীয় এমএ করেন কানাডার লেইকহেড ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৮৩ সালে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও ডিন, কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ। ঢাকার ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও মানববিদ্যা বিভাগের সভাপতি ও কলা অনুষদের ডিন হিসেবে কর্মরত ছিলেন ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। এরপর ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ মেয়াদে উপাচার্য ছিলেন। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক 'গল্পে গল্পে ইংরেজি শেখা' গ্রন্থের জন্য 'একুশে পুরস্কার' পান। আর ২০১৫ সালে ভারতের রবীন্দ্র-ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক 'এমিনেন্ট টিচার অ্যান্ড পোয়েট' সম্মাননায় ভূষিত হোন। বিদেশে শেক্সপিয়র ও অন্যান্য প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রবন্ধ পড়েন করাচি, হায়দরাবাদ, দিল্লি, পুনে, কলকাতা এবং নেপালের কাঠমান্ডু ও নাগরকোটে। কিছুদিন বিজ্ঞাপনচিত্রেও মডেল হয়েছিলেন। লেখালেখি শৈশব থেকেই।
উপন্যাস, গল্প, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, অনুবাদ, কলাম ও ইংরেজি ভাষা শেখার ওপর রচিত গ্রন্থ ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা সব মিলিয়ে চল্লিশেরও বেশি। প্রথম লেখা ছড়া- পারিবারিক হাতের লেখা পত্রিকা 'রাঙাতুলীর আঁচড়' এর তৃতীয় সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। প্রথম ছাপানো কবিতা দৈনিক জমানা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রথম প্রকাশিত গল্প 'আয়না', চৌধুরী জহুরুল হক সম্পাদিত 'সাত-সতেরো'তে, প্রকাশিত ১৯৬৭ সালে। প্রথম প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ গল্প, 'ফুল-পাখিদের মেয়ে', স্বাধীনতার পর পর আজাদীর সাহিত্যপাতায় ছাপা হয়। এরপর আরও কয়েকটা। ১৯৭৩ সালে ইত্তেফাকের সাহিত্য সাময়িকীতে গল্প ছাপা হয় 'নিগড়' এবং পরে এই গল্পের নাম দিয়েই তার প্রথম গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯৯১ সালে।
কালো বেড়াল, চুড়ি ভাঙার শুরু, নোঙরের শেষ নেই, এক জীবনে আরেক জীবন, মৌমিতা, গ্রেনেড, এলবাম, মুরলী এবং সনদ তার আলোচিত উপন্যাস। এ ছাড়া তার অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-
ছোটগল্প: নিগড়, সোনা আর ঘামের বনিবনা ও বলয় ছুঁয়ে ভালোবাসা। ইংরেজি গল্পগ্রন্থ:দ্য টেনটালাইজড হার্টল্যান্ড। কাব্যগ্রন্থ:মৌসুমের দূরে কাছে, এক সকালের কবিতা, এ পাড়ে অপার টান, ঝুলবারান্দায় মেঘ, ইউনিকোডের ইলশেগুঁড়ি ও মানুষেরা ফিরে যায় দীর্ঘশ্বাসে। প্রবন্ধ: সামাজিক চোখ, দেশ কোথায় আটকে আছে, ভাষা-মুক্তিযুদ্ধ-বঙ্গবন্ধু এবং আধুনিকতার পথে বাংলাদেশ। ইংরেজি ভাষা শিক্ষণের ওপর বই: গল্পে গল্পে ইংরেজি শেখা, এ স্ট্যান্ডার্ড ইংলিশ গ্রামার, ট্রান্সলেশন অ্যান্ড কম্পোজিশন, স্ট্যান্ডার্ড কমিউনিকেটিভ ইংলিশ টুডে, এ বুক অব ইংলিশ গ্রামার অ্যান্ড রিডিং কম্পোজিশন। ইংরেজি সাহিত্যের সংজ্ঞা পরিচায়ক বই:এন ইন্ট্রোডাকশন টু ইংলিশ লিটারেরি টার্মস। অনুবাদ: আন্তন চেখভের সাইবেরিয়া থেকে। শেক্সপিয়রের নাটকের অনুবাদ: রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, অ্যাজ ইউ লাইক ইট, দ্য মার্চেন্ট অব ভেনিস, জুলিয়াস সিজার, হ্যামলেট, ওথেলো, কিং লিয়ার, ম্যাকবেথ, অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা এবং কোরিওলেনাস। ইংরেজিতে সম্পাদিত শেক্সপিয়রের: অ্যাজ ইউ লাইক ইট এবং হ্যামলেট। ক্রিকেট নিয়ে লেখা বই: ক্রিকেটের ইনসুইংগার আউটসুইংগার। মুক্তিযুদ্ধের ওপর যৌথ সম্পাদনায় গ্রন্থ: মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা এবং ইংরেজিতে ঢাকা ইন দ্য লিবারেশন ওয়ার। সম্পাদকদ্বয়: মোহীত উল আলম ও আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার। সম্পাদিত ইংরেজি সাহিত্য জার্নাল: প্রিমিয়ার ক্রিটিক্যাল পারসপেক্টিভ এবং ক্রসিংস। সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা: কালধারা। তিনি জনপ্রিয় সাহিত্য পত্রিকা 'শব্দঘর'-এর সম্পাদনা পর্ষদের সদস্য। তিনি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। সৃজনশীল-সৃষ্টিশীল মোহীত উল আলমকে শুভেচ্ছা।
সংবাদমাধ্যমকর্মী
- বিষয় :
- মাহমুদ হাসান
- মোহীত উল আলম