রাজশাহীর পদ্মায় মরণফাঁদ

প্রতীকী ছবি
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ২৩:৪৭
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গত দুই সপ্তাহে ৯ শিশুর প্রাণহানি ও দুই শিশু নিখোঁজের ঘটনা উদ্বেগজনক। চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে নদীতে স্নান করিতে গিয়া তাহাদের এহেন পরিণতি বেদনাদায়ক। বিশেষ করিয়া জানুজল মনে হইলেও পদ্মা নদীর চোরা খাদে শিশুরা হারাইয়া যাইতেছে এবং এই ক্ষেত্রে সাঁতারে অজ্ঞতা বিশেষ ভূমিকা রাখিতেছে। প্রশ্ন হইল, একাদিক্রমে দুর্ঘটনা ঘটিলেও এই বিষয়ে প্রশাসন তৎপর হইল না কেন?
সোমবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুসারে, শিশুদের এই সকল দুর্ঘটনা পদ্মা ঘিরিয়া রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় ঘটিয়াছে। যেমন গোদাগাড়ীতে ডুবিয়াছে দুই কিশোর, মতিহার থানার শ্যামপুরে পদ্মায় ডুবিয়া প্রাণ হারাইয়াছে তিন কিশোর। বাঘা উপজেলায় কয়েকটি শিশুরও অনুরূপ পরিণতি হইয়াছে। নদীর চতুর্দিক শুষ্ক হওয়ায় পদ্মায় আপাত জলের গভীরতা অনুমিত হয় না। যাহার কারণে শিশুরা উৎফুল্ল হইয়া তথায় স্নান করিতে নামিয়া থাকে এবং তাপপ্রবাহের কারণে এই প্রবণতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়িয়াছে। কিন্তু জানুজলের পাশাপাশি কোথাও কোথাও গভীর খাদ রহিয়াছে, যেখানে পড়িয়া হয়তো শিশু আর উঠিতে পারে না।
আমরা মনে করি, প্রশাসনের অবহেলার কারণেই এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটিতেছে। শিশুরা যেন নদীতে নামিতে না পারে, তজ্জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়া উচিত। বিশেষ করিয়া জানুজলের মাঝে কোথায় গভীর খাদ রহিয়াছে, উহা চিহ্নিত করিয়া দেওয়া যাইত। রাজশাহী জেলা প্রশাসক সমকালকে জানাইয়াছেন, নদীতীরে স্বেচ্ছাসেবকদের নিযুক্ত করা হইতেছে। অবস্থাদৃষ্টে জরুরি ভিত্তিতেই তাহাদের কার্যে ব্যাপৃত করিতে হইবে। সন্তানদের সুরক্ষায় অভিভাবকদের সচেতনতা ও সতর্কতাও কম গুরুত্বপূর্ণ নহে। শৈশব হইতেই সবাইকে সাঁতার শিখানোর বিষয় জরুরি। তৎসহিত ইহাও বলা দরকার, এক সময়ের ‘সর্বনাশা’ পদ্মা বর্তমানে যে জানুজলের পর্যায়ে নামিয়াছে, উহাও কম বেদনাদায়ক নহে। বস্তুত সমগ্র দেশেই দখল-দূষণে নদীগুলো বিপর্যস্ত। নদীর সেই পূর্ণ যৌবন থাকিলে হয়তো এহেন পরিস্থিতির উদ্ভব হইত না। পদ্মার নাব্য ফিরাইতে খননসহ যথাযথ পদক্ষেপ প্রয়োজন। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিশুদের সুরক্ষায় ত্বরিত ব্যবস্থা লইতেই হইবে।
- বিষয় :
- পদ্মা