ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জন্মদিন

‘তিনি একই সঙ্গে বড় ভাই, বন্ধু, শিক্ষক ও ম্যাজিশিয়ান’

‘তিনি একই সঙ্গে বড় ভাই, বন্ধু, শিক্ষক ও ম্যাজিশিয়ান’

ছবি: সংগৃহীত

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ১২:৩৩ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ১২:৩৪

নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন আজ। অনবদ্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে মানুষটি অগণিত পাঠক ও দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। সে কারণেই তা নিয়ে আজ নানা ধরনের আয়োজন হচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। একইভাবে তাঁর সৃষ্টি নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন তিন অভিনয়শিল্পী  

ডলি জহুর
‘এইসব দিনরাত্রি’ সেই নাটক, যা আমাকে দর্শক আলোচনায় নিয়ে এসেছিল। হুমায়ূন আহমেদের লেখা প্রথম ধারাবাহিক এ নাটকে আমার নীলু ভাবী চরিত্রটি অনেকের মনে ছাপ ফেলেছিল। এর বাইরেও অনেক কারণে এ নাটকের কথা ভুলে থাকা কঠিন। এখন মাঝেমধ্যে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে স্মৃতি রোমন্থনে ডুবে যাই। মনে পড়ে, ও যখন আমার গর্ভে, ঠিক সেই সময়ে অন্তঃসত্ত্বা এই আমি নিয়মিত ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকের শুটিং করে গেছি। অভিনয়ের নেশায় কীভাবে নীলু চরিত্রের সঙ্গে পুরোপুরি মিশে গিয়েছিলাম, ভাবলে এখনও অবাক লাগে। হাসি পায়, পত্রিকার পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনের সেই বাক্যটির কথা মনে হলে। যেখানে লেখা ছিল, ‘নীলুর মতো মেয়ে চাই’। এটাই আসলে হুমায়ূন আহমেদের ম্যাজিক। গল্প বলার ভঙ্গি আর একেকটি চরিত্র নির্মাণে তিনি যে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন, তা আজও দর্শকমনে গেঁথে আছে।

জাহিদ হাসান
সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসার পর মঞ্চ নাটকে কাজ শুরু করি। মঞ্চে ‘বিচ্ছু’ নাটকে অভিনয় করে হুমায়ূন আহমেদের চোখে পড়ে যাই। এরপর আমাকে নিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘আজ রবিবার’। এ নাটকে আনিস চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পাই। এরপর তাঁর নাটক ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনেতা হয়ে যাই। ‘সবুজ সাথী’ নাটকে লাঠিধরা পাগলা মফিজের চরিত্র বা ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিতে ঘাতক মতি, ‘আমার আছে জল’ ছবিতে জামিলসহ হুমায়ূন আহমেদের তৈরি করা অসংখ্য মজার মজার চরিত্রে কাজ করেছি। হুমায়ূন আহমেদের সব গল্পে ইট, রড, কাঠ, পাথর ও সিমেন্টের সভ্যতায় বসেও আমরা শেকড়ে জলের সন্ধান পাই। পায়ের তলায় ভূমির শিহরণ অনুভব করি। নিজেকে ধন্য মনে করি যে, হুমায়ূন আহমেদের মতো এমন একজন কিংবদন্তি মানুষের সংস্পর্শে গিয়ে কাজ করেছি। এমন ভাগ্য ক’জন শিল্পীর ক্ষেত্রে ঘটে। তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল ভাই, বন্ধুস্থানীয়। তিনি একই সঙ্গে আমার বড় ভাই, আবার শিক্ষকও। আমার ক্যারিয়ারের উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন হুমায়ূন আহমেদ।

মাহফুজ আহমেদ 
হুমায়ূন আহমেদের কত শত স্মৃতি হৃদয়ে ধারণ করে আছি, তাঁর হিসাব দেওয়াও অসম্ভব। যার কিছু ঘটনা মনে পড়লে অজান্তেই হেসে উঠি এখনও। এই যেমন ‘হাবলঙ্গের বাজারে’ নাটকে কাগজ খাওয়ার দৃশ্য। যেখানে দেখা গেছে, শাওনের জন্য লেখা কবিতার কাগজটি তাঁর বাবা আতাউর রহমানের গিলে ফেলতে। যদিও দর্শক পর্দায় একবারই কাগজ গিলে খাওয়া দেখেছেন, কিন্তু শুটিংয়ে তা কয়েকবার করতে হয়েছে। কারণ, হুমায়ূন আহমেদ স্যার কখনও কোনো দৃশ্য এক টেকে নিতেন না। তাই আমাকেও এই কাগজ খাওয়ার দৃশ্যে কয়েকবার অভিনয় করতে হয়েছে। কায়দা করে মুখের মধ্যে কাগজ জমিয়ে রাখার পরও একবার তা গলায় আটকে গিয়েছিল। তবে প্রাণ সংশয় অবস্থায় পৌঁছানোর আগেই সে যাত্রা রেহাই পেয়েছিলাম।’

 
 

আরও পড়ুন

×