লোকসভা নির্বাচন
বিজেপিবিরোধী ঐক্য গড়ছেন রাহুল গান্ধী-নীতিশ

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে’র বাসায় রাহুল গান্ধী ও নীতিশ কুমার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ | ০৭:০০ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ | ০৭:৪৩
আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বিজেপিবিরোধী জোট করতে যাচ্ছে কংগ্রেসসহ একাধিক দল। এই জোট ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস।
এ লক্ষে বুধবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে-এর বাসায় বৈঠক করেছেন একাধিক দলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও সংযুক্ত জনতা দলের নেতা নীতিশ কুমার, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব।
বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, বিরোধী ঐক্য গড়তে আমরা একটি পদক্ষেপ নিয়েছি। কতগুলো দল এতে যুক্ত এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ঐক্য প্রক্রিয়ায় তারা বিরোধী সব দলের সঙ্গে কাজ করছেন। খবর: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস ও আনন্দবাজার অনলাইন
নীতিশের সঙ্গে বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন মল্লিকার্জুন খড়্গে।
আর নীতিশ কুমার বলেছেন, এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় অন্যান্য বিরোধী দলগুলোকে যুক্ত করার চেষ্টা করছি যাতে আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারি।
মূলত দু’টি ক্ষেত্রে বিরোধী ঐক্য গড়তে চাইছেন খড়্গে। প্রথমত, লোকসভা নির্বাচনের আগেই কোনো আনুষ্ঠানিক বিরোধী জোট বা মঞ্চ তৈরির বদলে যত বেশি সম্ভব আসনে বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিজেপি বিরোধী ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী দেওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, আনুষ্ঠানিক বিরোধী জোট না ঘোষণা করার ফলে সেই জোটের নেতা কে হবেন, তা নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়া যাবে।
অনেক বিরোধীদেরই আপত্তি রয়েছে বুঝে কংগ্রেস আগেভাগে রাহুলকে বিরোধী জোটের নেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করবে না। ইতিমধ্যেই বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে রাহুল নিজেও সেই ‘বার্তা’ দিয়েছেন।
জেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় টুইটারে নীতিশ কুমারের একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে- রাহুল গান্ধীর দিকে ঝুঁকে কংগ্রেস নেতাকে অভিবাদন জানাচ্ছেন নীতিশ।
ছবিটি দিয়ে বিজেপি নেতা মালবীয় বিদ্রুপ করে লেখেন, ‘এটা ভেবেই অবাক হচ্ছি যে, নীতিশ কুমার আর কার কার সামনে মাথা ঝোঁকাবেন।’ কখনও বিজেপির সঙ্গে, কখনও বা কংগ্রেসের সঙ্গে- নীতিশের বারবার অবস্থান এবং পক্ষ বদল নিয়েই বিজেপি নেতা কটাক্ষ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে বিরোধীদের জোট গঠনকে কৌরবদের চেষ্টার সঙ্গে তুলনা করেছেন বিজেপি নেত্রী খুশবু সুন্দর। তাঁর কথায়, বিরোধীরা ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমার এদের দেখে কৌরবদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। কংগ্রেসও জানে, এই লড়াইয়ে কে জিততে চলেছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বিরোধীদের ‘জোটবন্ধন’কে ‘ঠগবন্ধন’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
প্রসঙ্গত, বিজেপিকে ঠেকাতে ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে, নীতিশের দল জেডিইউ, লালু প্রসাদ যাদবের দল আরজেডি ও কংগ্রেস মিলিয়ে মহাজোট গঠিত হয়। ২০১৭ সালে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আরজেডি-সঙ্গ ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েন নীতিশ। ২০২১ সালে বিধানসভায় বিজেপির তুলনায় কম আসন পাওয়া সত্ত্বেও নীতিশকে মুখ্যমন্ত্রী করে পুরনো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিল বিজেপি।
গত বছরের আগস্টে বিজেপির সঙ্গে জোট ভাঙ্গেন নীতিশ। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে রাজভবন থেকে সরাসরি লালু প্রসাদ যাদবের ছেলে তথা রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে দেখা করেন। সেই বৈঠকে মহাজোটের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক শুরু করার উপরে জোর দেন। পরবতীতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নীতিশ কুমার। নীতিশের সঙ্গেই উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তেজস্বী যাদব।