বিলাইছড়ি কলেজের স্বপ্নযাত্রা শুরু

বিলাইছড়ি কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে কেক কাটছেন জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান সমকাল
সত্রং চাকমা, রাঙামাটি
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২২:৩০
অবশেষে চালু হলো বিলাইছড়ি কলেজ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজে গত ৫ সেপ্টেম্বর শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে উপজেলার দুর্গম অঞ্চলের গরিব শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ২০২৩ সালের ৩০ জুন বিলাইছড়ি উপজেলা পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় উপজেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপজেলায় একটি কলেজ চালুর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি তুলেন। জেলা প্রশাসক কলেজ চালুর ঘোষণা দেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে উপজেলা থেকে জেলার বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হওয়া ২৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিলাইছড়ি কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়। তবে শিক্ষা বোর্ড থেকে মৌখিকভাবে অনুমোদন পাওয়ায় মানবিক ও ব্যবসায় শাখায় মোট ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়। কলেজে বর্তমানে ৬ জন শিক্ষক ও ২ জন কর্মচারী রয়েছেন। কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে বিনামূল্য বই ও ইউনিফর্ম বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে, বিলাইছড়ি কলেজের পাঠদান শুরু উপলক্ষে সম্প্রতি নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসরীন সুলতানা ও মো. সাইফুল ইসলাম, বিলাইছড়ি জোনের (৩২ বীর) জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. রিফায়েত করীম চৌধুরী, পিএসসি ও জোন উপাধিনায়ক মো. মাজেদুর রহমান পিএসসি, বিলাইছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) নুরে আলম। রুবেল বড়ুয়ার সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন কলেজের প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানা। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বুদ্ধ জ্যোতি চাকমা। প্রধান অতিথি দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ মেধাক্রম অনুযায়ী তিনজন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘কলেজটি প্রতিষ্ঠায় সবাই অবদান রেখেছেন। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে প্রথম বর্ষের কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছিলাম। কলেজের জন্য চার একর জমি বন্দোবস্ত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড থেকে দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস পাবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘বিলাইছড়ি থেকে রাঙামাটি শহরে গিয়ে পড়ালেখা করা ব্যয়বহুল ও অনেক কষ্টের বিষয়; যা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য বিলাইছড়ি কলেজে আমরা ভর্তি ফি মওকুফ করেছি, বিনামূল্য পোশাক, বইসহ সবকিছু দেওয়া হয়েছে।’
কলেজের প্রভাষক অমৃত কুমার চাকমা জানান, ‘শ্রেণি কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক সব শিক্ষক থাকা আবশ্যক। শিক্ষক সংকটের কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাঠদানে অংশ নেন।’
বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা বলেন, ‘পাঠদান অনুমতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। জেলা প্রশাসকের তত্বাবধানে কলেজের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চলছে।’
- বিষয় :
- কলেজ শিক্ষার্থী