ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ক্রেতাবান্ধব ক্যাম্পেইনে সম্ভাবনা বাড়ছে ডিজিটাল কমার্সের

ক্রেতাবান্ধব ক্যাম্পেইনে সম্ভাবনা বাড়ছে ডিজিটাল কমার্সের

.

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২৩:৩৩

বৈষম্যহীন ও ন্যায্যতার নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ খাত  ই-কমার্স। দেশের ডিজিটাল কমার্স সাইটগুলো ইতোমধ্যে জনজীবনকে সহজ ও সাশ্রয়ী করেছে।  ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে উন্মোচন করেছে নতুন দিগন্ত। ফুডপান্ডা, চালডাল, দারাজ এবং পিকাবুর মতো প্ল্যাটফর্ম হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতাকে নগদ লেনদেন থেকে ডিজিটাল পেমেন্টে স্থানান্তরিত হওয়ার উৎসাহ দিচ্ছে।  প্ল্যাটফর্মগুলো সারাবছর ক্রেতাবান্ধব ক্যাম্পেইন আয়োজন করে। ক্যাম্পেইনের সময়   লেনদেনের পরিমাণ সাধারণ সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। এতে উদ্যোক্তা, উৎপাদক, বিক্রেতা ও সরবরাহকারীদের জন্য নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ ধরনের ক্রেতাকেন্দ্রিক ক্যাম্পেইন, যা জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।  আয়োজন করতে বড় প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। দেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স ক্যাম্পেইনের একটি হলো দারাজ ১১.১১, যা বছরের সবচেয়ে বড় ‘বিক্রয় উৎসব’ হিসেবে পরিচিত। গত ১১ তারিখ শুরু হয়ে যাওয়া এই ক্যাম্পেইন চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত, যেখানে আছে ৫০ কোটি টাকার ভাউচার, ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ফ্ল্যাশ সেল এবং ফ্রি ডেলিভারি। উৎপাদক, বিক্রেতা, সরবরাহকারী এবং গ্রাহকরা ইভেন্টটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। তাদের প্রত্যাশাকে বাস্তবে রূপ দিতে সরবরাহ চেইনের বিভিন্ন শাখায় নিখুঁত পরিকল্পনা ও সমন্বয় অপরিহার্য।
ক্যাম্পেইনের সময় বাড়তি অর্ডার সামলাতে লজিস্টিক প্রস্তুতি গুরুত্বপূর্ণ। দারাজ বিশেষভাবে তাদের অপারেশনস পরিচালনা এবং ডেলিভারি রুট অপটিমাইজেশনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ডেলিভারির দূরত্ব, গাড়ির ক্ষমতা এবং সম্ভাব্য দেরি বিবেচনায় রেখে সবচেয়ে কার্যকর ডেলিভারি রুট বাছাই করা হয়েছে। দারাজ ক্যাম্পেইন চলাকালে বিপুল পরিমাণ প্যাকেজ সরবরাহের জন্য বিভিন্ন ভূমিকার জন্য খণ্ডকালীন আয়ের সুযোগও তৈরি করেছে। এ ছাড়া গুদামের সক্ষমতা বাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ধরনের ইভেন্টগুলোকে সফল করার জন্য ‘কমার্শিয়াল সেলার কানেক্ট’ এর মতো উদ্যোগ অপরিহার্য। দারাজ ১১.১১ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী বিক্রেতাদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে অপারেশনাল পরিকল্পনা, কমপ্লায়েন্স ম্যানেজমেন্ট এবং মার্কেটিং কৌশল নিয়ে কাজ করে। গত ১৬ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত দারাজ বিভিন্ন খাতের বিক্রেতাদের সঙ্গে ছয় দিনের একটি ইভেন্টের আয়োজন করে, যা ক্যাম্পেইনের জন্য দারাজের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে। দারাজ স্টার্টআপ এবং ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের সম্পূর্ণ সেবা সহায়তা প্রদান করে নতুন বিক্রেতাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের ব্যবসা বাড়াতে সাহায্য করে। ১১.১১ ক্যাম্পেইনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামগুলোকে নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে ‘আর্লি বার্ড’ প্রোগ্রামের মতো প্রণোদনা এবং নতুন বিক্রেতাদের জন্য কমিশন ছাড়াই প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ক্যাম্পেইনের আগে প্ল্যাটফর্মে পণ্য সঠিকভাবে রয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
‘দারাজ ইউনিভার্সিটি’ বিক্রেতাদের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করছে, যেখানে পণ্য প্যাকেজিংয়ের সেরা অনুশীলন, সময়মতো অর্ডার প্রক্রিয়াকরণ এবং গ্রাহক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিক্রেতারা ফ্রি ডেলিভারি এবং ভাউচারের মতো উদ্ভাবনী প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য আকর্ষণীয় সুবিধা দিতে পারছে। বিক্রেতারা তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে ডেডিকেটেড বিজনেস অ্যাডভাইজারদের সহায়তাও পাচ্ছেন। দারাজ মার্কেটিং সলিউশনসের মাধ্যমে ১১.১১-এর আগে বিক্রেতারা প্রতিযোগিতামূলক হারে সুবিধা নিতে পারছে এবং অন বোর্ডিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাহিদাসম্পন্ন বাজারে প্রবেশ করতে পারছে। এ ছাড়া ক্রেতাদের জন্য প্রডাক্ট রিটার্নের ক্ষেত্রে রিফান্ডের ব্যবস্থা মসৃণ করা হয়েছে, যাতে ক্রেতাদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর হয়। নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে দারাজ তার পেমেন্ট পার্টনারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।
ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানো, উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন এবং লজিস্টিক সেবা শক্তিশালী করার মাধ্যমে দারাজ ১১.১১ শুধু একটি শপিং উৎসব নয়, বরং বাংলাদেশের ই-কমার্স বৃদ্ধির একটি চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। এটি দেশকে ডিজিটালি চালিত, সমতাপূর্ণ অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথকে ত্বরান্বিত করছে, যা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও সুদৃঢ় করছে।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দারাজ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যা পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং মিয়ানমারে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটি ৫০ কোটিরও বেশি মানুষের এ অঞ্চলে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সর্বাধুনিক মার্কেটপ্লেস প্রযুক্তি প্রদান করে। ই-কমার্স, লজিস্টিকস, পেমেন্ট ও আর্থিক পরিষেবাগুলোকে নিয়ে এক সমন্বিত অবকাঠামো গড়ে দারাজ উন্নত শপিং অভিজ্ঞতা প্রদান এবং ব্যবসায়িক দক্ষতা বৃদ্ধি করে দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়নে কাজ করছে।

আরও পড়ুন

×