ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

লক্ষ্য এখন বিশ্ববাজার

লক্ষ্য এখন বিশ্ববাজার

এই গরমে চাহিদা বেড়েছে এসির। রোববার রাজধানীর স্টেডিয়াম মার্কেটের একটি শোরুমে সাজ্জাদ নয়ন

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪ | ২৩:৪৮

বিশ্বে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বাজার ১৫০ বিলিয়ন ডলারের। স্থানীয় মুদ্রার বিবেচনায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বৈশ্বিক বাজার এখন চীনের দখলে। বাংলাদেশ দেশের চাহিদা মিটিয়ে এসির আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে চায়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে রপ্তানি শুরু করেছে। সরকারের নীতি-সহায়তা পেলে এসি হতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় উৎস। বাংলাদেশ বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে সংকট চলছে, তা থেকে উত্তরণে এসি বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদনকারীরা।
বাংলাদেশ থেকে এসি রপ্তানি হয় খুব সামান্য। তবে এর প্রবৃদ্ধি অনেক। রপ্তানি আয় অনেক বেশি হারে বাড়ানোর যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী,  ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশে এসি রপ্তানি হয়েছে ১৪ লাখ ২৬ হাজার ডলারের, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরে  যা ছিল ৮ লাখ ৮১ হাজার ডলার। এর মানে এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে রপ্তানি। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের  প্রথম আট মাসে রপ্তানি হয়েছে ৭ লাখ ডলার মূল্যমানের এসি।
ইলেকট্রনিক পণ্যের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এসি রপ্তানি করে থাকে। ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের এসি এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। স্থানীয় বাজারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারেও ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ড শক্তিশালী করতে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত বিশ্বের বাজারে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে ওয়ালটন। কোম্পানিটি কয়েকটি দেশে সাবসিডিয়ারি এবং শাখা অফিস স্থাপন করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় স্থাপন করেছে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার। সেখানে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের উদ্ভাবনী পণ্যের পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকার স্ট্যান্ডার্ড, আবহাওয়া এবং ক্রেতাদের চাহিদা বিষয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চলছে।

প্রাণ গ্রুপের ব্র্যান্ড ‘ভিশন’ দুই বছর আগে এসি রপ্তানি শুরু করেছে। ভিশন এসি রপ্তানি হচ্ছে ভানুয়াতু, ফিজি, গিনি, দিজুবতি, সিয়েরা লিওনসহ বিভিন্ন দেশে। তারা ভারতসহ  কয়েকটি দেশে এসির রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে। শিগগিরই মিনিস্টার ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক বাজারে পা রাখতে যাচ্ছে। গ্রুপের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসির চাহিদা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে  বাড়ছে। সে কারণে  রপ্তানির সম্ভাবনাও ব্যাপক হারে বাড়ছে। তারা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এসি উৎপাদন করছেন। দেশের চাহিদা পূরণ করে শিগগিরই এসি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে অবদান রাখতে চান তারা।

ইলেক্ট্রোমার্টের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল আফছার জানিয়েছেন, তাদের পরিকল্পনা রয়েছে দেশের চাহিদা মিটিয়ে সামনের দিনগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসি রপ্তানি করার। এসি রপ্তানিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি। সরকার দীর্ঘ মেয়াদে কর অব্যাহতির মতো কিছু সুযোগ-সুবিধা দিলে দেশ থেকে এসি রপ্তানি বাড়বে।
ওয়ালটন এয়ারকন্ডিশনারের  চিফ বিজনেস অফিসার মো. তানভীর রহমান জানান, আমদানিকারকদের চেয়ে যেন স্থানীয় শিল্প বেশি সুবিধা পায়, তা  নিশ্চিত করতে হবে। যাতে বাণিজ্যিক এসিতে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানিমুখী হতে পারে বাংলাদেশ।
মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন সোহেল কিবরিয়া জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছর বাণিজ্য মেলায় মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের স্টল পরিদর্শনকালে তাদের পণ্য রপ্তানি করার ওপর বিশেষ আলোকপাত করেন।

আরও পড়ুন

×