এটুআই বিল পাস, সংক্ষুব্ধ তথ্যপ্রযুক্তি নেতারা

হাসান জাকির
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৩ | ১৬:৪৪ | আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ | ১৭:৩১
সরকারি সেবার ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত ও টেকসই করার লক্ষ্যে এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) নামে নতুন সংস্থা গঠনে সংসদে বিল পাস হয়েছে। বুধবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উত্থাপিত ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এটি হবে মূলত বর্তমান এটুআই প্রকল্পের স্থায়ী কাঠামো।
ওই বিলে বলা হয়েছে, আইনটি কার্যকর হওয়ার পর সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে এটুআই নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে। এটি হবে সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এর ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হবেন এর সভাপতি।
নতুন পাস করা এ আইনে এটুআইয়ের অধীনে কোম্পানি খুলে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ আইনের প্রস্তাবের শুরু থেকেই কোম্পানি খোলা ও ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ রাখাকে সাংঘর্ষিক বলে আসছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ী নেতারা। আইনটি আইসিটি খাতের কোম্পানিগুলোর সরকারের সঙ্গে ব্যবসার সুযোগকে সংকুচিত করবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে গত বছরের ৩০ মে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দেয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ পাঁচ সংগঠন বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি, ই-ক্যাব ও বাক্য। সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়। এ সম্পর্কে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বরাবর আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমাদের আপত্তি ও দাবি-দাওয়াকে বিবেচনায় রাখবেন। সর্বশেষ গত ১৮ জুন জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভায় আমাদের ৫ সংগঠনের নেতাদের ডাকা হয়। বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি, ই-ক্যাব ও বাক্য সভাপতি ওই সভায় হাজির হয়ে আমাদের আপত্তির বিষয়টি উপস্থাপন করি। ওই সভায় আমাদের আশ্বস্ত করা হয়, প্রস্তাবিত বিল থেকে এটুআইয়ের অধীনে কোম্পানি গঠন ও কারবারের (ব্যবসা-বাণিজ্য) সুযোগ বাদ দেওয়া হবে। কিন্তু সেটি কেন বাদ দেওয়া হলো না তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব।’ বাক্য সভাপতি ওয়াহিদ শরীফও একই অভিমত ব্যক্ত করেন।
১৮ জুন সংসদীয় কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি সমকালকে বলেন, ‘সেখানে আমরা সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছিলাম, এটুআই কোনো ব্যবসা করবে না, কোম্পানি খুলবে না। কিন্তু বিল পাসের সময় কেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী উল্টোটা করলেন সেটি আমার বোধগম্য নয়। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত হচ্ছে উদীয়মান শিল্প।
২০২৫ সালের মধ্যে আমরা এ খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে চায়। এখন ইন্ডাস্ট্রিকে প্রতিযোগী হিসেবে দাঁড় করিয়ে এটুআই কি ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে দেবে? মাননীয় আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বেসরকারি খাতের ক্ষতি হবে এমন কোনো কথা কখনো বলেননি, বলবেনও না। আমি মনে করি, সরকার ইন্ডাস্ট্রির প্রতিযোগী নয়, সহায়ক। এক্ষেত্রে আমি ইন্ডাস্ট্রির পক্ষেই থাকব।’
এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।