ভোজ্যতেল

বেশ কয়েকদিন ধরে বাজারে বোতলজাত তেলের সরবরাহ কম। আমদানিকারক ও বাজারজাতকারীর দাবির প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়। এর পরও বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়েনি।

ভোজ্যতেল নিয়ে যারা দুষ্টামি করে বা ভোক্তাস্বার্থবিরোধী কাজ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।

নভেম্বর থেকে জানুয়ারি– এই তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নেমেছে ২ লাখ ৩২ হাজার টন। এটি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৯ শতাংশ বেশি। এ তথ্য খোদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। এবার সয়াবিন বীজের আমদানিও ছাড়িয়েছে রেকর্ড।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেছেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কারসাজির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সিন্ডিকেট সরকারের চেয়ে শক্তিশালী নয়। দেশে বিভিন্ন পণ্যের মজুদ ও সরবরাহের ওপর সরকারের নজরদারি রয়েছে। এই মুহূর্তে ভোজ্যতেলের বাজারে যে অস্থিরতা রয়েছে তা এক সপ্তাহের মধ্যে কেটে যাবে।

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে আবারও ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

আসন্ন রমজানে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও মূল্য সহনীয় রাখার লক্ষ্যে ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা, সয়াবিন ও পাম ওয়েল আমদানিতে বিদ্যমান সকল আমদানি শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি এবং অগ্রিম আয়কর আগামী ৩১ মার্চ, ২০২৫ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ভোজ্যতেলের ওপর বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

সয়াবিন তেলের দর লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কোম্পানিগুলো। 

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং আসন্ন পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ভোজ্যতেল, চাল, চিনি ও খেজুরের ওপর শুল্ক-কর ছাড় দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ অনুযায়ী, প্রাক্‌-বিদ্যালয়গামী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন ভিটামিন ‘এ’ এবং দুইজন ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন প্রণয়ন করেছে। তবে ড্রামে বাজারজাতকৃত খোলা ভোজ্যতেল এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। তবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল নিশ্চিতকরণ জরুরি বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।