ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

নৈশকোচে ডাকাতি-ধর্ষণ

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন রাজা মিয়া: টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন রাজা মিয়া: টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার

টাঙ্গাইল ও মধুপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২২ | ০৫:৪৩ | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২২ | ০৫:৪৩

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের নৈশকোচে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার রাজা মিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান তিনি। এর আগে এ দিন ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় যাত্রীদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত তিনটি মোবাইল ফোন তার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়।

রাজা মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। পেশায় টাঙ্গাইলের ঝটিকা বাসের চালক।

পুলিশ সুপার জানান, রাজা মিয়া ডাকাতির সময় নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বাস চালাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও তিনি পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ আরও তথ্য দিয়েছেন। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এ কারণে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, বাসটি ২৪ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি দিবারাত্রি হোটেলে নৈশভোজের জন্য যাত্রাবিরতি দেয়। পরে দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। সিরাজগঞ্জ রোড থেকে চারজন যাত্রী ওঠেন। কিছু দূরে গিয়ে আরও তিনজন ওঠেন। এর পরে কড্ডার মোড় থেকে আরও তিনজন ওঠেন। তখন সবাই প্রায় ঘুমে।

বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে একে একে সব যাত্রীকে বেঁধে ফেলে। প্রত্যেক যাত্রীর চোখ ও মুখ বেঁধে চালককেও জিম্মি করে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। গ্রেপ্তার রাজা মিয়া বাসের চালককে উঠিয়ে নিজে নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারা সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল, টাকা, গহনা লুট করে নেয়। তারপর পেছনে বসা এক নারীকে ডাকাত দলের ছয় সদস্য ধর্ষণ করে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গাড়িতে তখন আরও কয়েকজন নারী ছিলেন। তাদের সঙ্গে ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে ছিল। হয়ত এ কারণেই তারা রক্ষা পেয়েছেন। ডাকাত দল বাসটি নাটিয়া পাড়া নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ঘুরিয়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের সামনে ফেলে রেখে তারা নেমে যায়।

এ ঘটনায় বাসের যাত্রী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার হেকমত আলী বাদী হয়ে ডাকাতি ও নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, রক্তিপাড়ার কাছেই ডাকাত দলের সদস্য রতনের মামার বাড়ি। আমরা জানতে পেরেছি, ডাকাত দল বাস থেকে নেমে রতনের মামার বাড়িতে যায়। তারপর সেখান থেকে তারা যার যার মতো চলে যায়। ডাকাত দলের সবাইকে আমরা চিহিৃত করতে পেরেছি। একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। আশা করছি খুব দ্রুতই অন্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।

আরও পড়ুন

×