বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষতির মুখে ব্যবসা

বিদ্যুৎ নেই। মোমবাতি জ্বালিয়ে কাজ করছেন কয়েক কর্মী। পাশেই দু'জন ব্যস্ত মোবাইল ফোনে। রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফারজানা টাওয়ারের একটি হোসিয়ারি কারখানায়-সমকাল
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০
'দোকান খুলতে খুলতে সকাল সোয়া ৯টা বেজে যায়। সোয়া ১০টায় শুরু হলো লোডশেডিং। এখন বাজে দুপুর ১২টা। বিদ্যুৎ কখন আসবে, আর কখনইবা কাজ শুরু করব?' আক্ষেপ নিয়ে গতকাল রোববার দুপুরে কথাগুলো বলছিলেন মো. রুহুল আমিন রোমান। নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম পাইকারি মার্কেট ফারজানা টাওয়ারের সপ্তম তলায় তাঁর মালিকানাধীন মুসকান হোসিয়ারির অবস্থান।
বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে ছিল তাঁর প্রতিষ্ঠানটি। রিচার্জেবল লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে কর্মচারীদের নিয়ে বসে ছিলেন রুহুল আমিন। তিনি বলছিলেন, দিনে ৩-৪ বার লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়। প্রতিবার বিদ্যুৎ গেলে ২ ঘণ্টার আগে আসে না। নতুন দামে জ্বালানি তেল কিনে জেনারেটর চালিয়ে যেতে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর শীতের পোশাক তৈরির জন্য প্রচুর কার্যাদেশ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সঠিক সময়ে এসব সরবরাহ নিয়ে শঙ্কায় আছেন বলেও জানান রুহুল আমিন। তিনি আরও বলছিলেন, 'এমনিতেই করোনার কারণে আমার বড় হোসিয়ারি কারখানা ছোট হয়ে পড়েছে। অনেক ক্রেতা ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ে পথে বসেছেন। তবু সরকার আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেয় না।'
বর্তমানে রুহুল আমিনের প্রতিষ্ঠান দিনে ১২ ঘণ্টা চালু রাখার কথা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অর্ধেক
সময়ই বিদ্যুৎহীন থাকতে হয় বলে উৎপাদনও বন্ধ থাকে।
একই রকম মন্তব্য করলেন সেখানে বসে থাকা পাশের পান্না হোসিয়ারির নূরুল ইসলাম জামান, সেলিম ট্রেডার্সের সেলিম মিয়া, নাবিল হোসিয়ারির আল আমিন। শ্রমিকরাও এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তাঁদের কাছ থেকে জানা গেছে, ফারজানা টাওয়ারে অনেক ব্যবসায়ীর নিজস্ব জেনারেটর রয়েছে। এ ছাড়া অন্যরা ভাড়ায় চালিত জেনারেটরের সংযোগ নিয়ে কাজ চালান। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে হোসিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
পাশের রিভারভিউ মার্কেটের সায়মন ট্রেডার্সের মালিক ইমরান ভূঁইয়া বলেন, 'কারখানায় কাজ চালু রাখতে বেশিভাগ সময় জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে পোশাক তৈরিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। একদিকে শ্রমিককে বেতন দিচ্ছি, অপরদিকে বাড়তি দামে কেনা তেল দিয়ে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে।'
এই ব্যবসায়ীদের মুনাফার বড় অংশ চলে যাচ্ছে জেনারেটরের তেল কিনতে গিয়ে। চলতি অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে তাঁদের ব্যবসায়ও বড় অঙ্কের ক্ষতি হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) কার্যকরী কমিটির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'লোডশেডিং মানেই আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। তবে পরিকল্পিত যে দুই ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের কথা আমাদের বলা হয়েছিল তা কিন্তু ম্যানেজেবল। সেটা আমরা করতে পারি। তবে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি হলে সমস্যা। সেই সমস্যাটাই হচ্ছে।'
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে বিদ্যুতের চেয়েও গ্যাস সংকটে তাঁদের বেশি ভুগতে হচ্ছে বলেও জানান মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, 'লোডশেডিং ঘণ্টা দুয়েক ম্যানেজ করা গেলেও গ্যাস সংকট ম্যানেজ করা যাচ্ছে না। এর ফলে আমাদের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সিডিউল ঠিক থাকছে না। এয়ার-শিপমেন্ট ব্যাহত হচ্ছে।' সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সামনে ব্যবসা বাড়ানোর যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল, তা এসব কারণে হাতছাড়া হচ্ছে বলেও মনে করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
এ বিষয়ে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ বলেন, তাঁদের শিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং হচ্ছে। লাইনের সমস্যার কারণে কিংবা কাজের জন্য কোথাও কোথাও সংযোগ বেশিক্ষণ বন্ধ থাকতে পারে। লোডশেডিংয়ের শিডিউল সঠিকভাবেই ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে ছিল তাঁর প্রতিষ্ঠানটি। রিচার্জেবল লাইট ও মোমবাতি জ্বালিয়ে কর্মচারীদের নিয়ে বসে ছিলেন রুহুল আমিন। তিনি বলছিলেন, দিনে ৩-৪ বার লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়। প্রতিবার বিদ্যুৎ গেলে ২ ঘণ্টার আগে আসে না। নতুন দামে জ্বালানি তেল কিনে জেনারেটর চালিয়ে যেতে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর শীতের পোশাক তৈরির জন্য প্রচুর কার্যাদেশ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সঠিক সময়ে এসব সরবরাহ নিয়ে শঙ্কায় আছেন বলেও জানান রুহুল আমিন। তিনি আরও বলছিলেন, 'এমনিতেই করোনার কারণে আমার বড় হোসিয়ারি কারখানা ছোট হয়ে পড়েছে। অনেক ক্রেতা ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ে পথে বসেছেন। তবু সরকার আমাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেয় না।'
বর্তমানে রুহুল আমিনের প্রতিষ্ঠান দিনে ১২ ঘণ্টা চালু রাখার কথা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অর্ধেক
সময়ই বিদ্যুৎহীন থাকতে হয় বলে উৎপাদনও বন্ধ থাকে।
একই রকম মন্তব্য করলেন সেখানে বসে থাকা পাশের পান্না হোসিয়ারির নূরুল ইসলাম জামান, সেলিম ট্রেডার্সের সেলিম মিয়া, নাবিল হোসিয়ারির আল আমিন। শ্রমিকরাও এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তাঁদের কাছ থেকে জানা গেছে, ফারজানা টাওয়ারে অনেক ব্যবসায়ীর নিজস্ব জেনারেটর রয়েছে। এ ছাড়া অন্যরা ভাড়ায় চালিত জেনারেটরের সংযোগ নিয়ে কাজ চালান। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে হোসিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
পাশের রিভারভিউ মার্কেটের সায়মন ট্রেডার্সের মালিক ইমরান ভূঁইয়া বলেন, 'কারখানায় কাজ চালু রাখতে বেশিভাগ সময় জেনারেটর চালাতে হচ্ছে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে পোশাক তৈরিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। একদিকে শ্রমিককে বেতন দিচ্ছি, অপরদিকে বাড়তি দামে কেনা তেল দিয়ে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে।'
এই ব্যবসায়ীদের মুনাফার বড় অংশ চলে যাচ্ছে জেনারেটরের তেল কিনতে গিয়ে। চলতি অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে তাঁদের ব্যবসায়ও বড় অঙ্কের ক্ষতি হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) কার্যকরী কমিটির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'লোডশেডিং মানেই আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। তবে পরিকল্পিত যে দুই ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের কথা আমাদের বলা হয়েছিল তা কিন্তু ম্যানেজেবল। সেটা আমরা করতে পারি। তবে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি হলে সমস্যা। সেই সমস্যাটাই হচ্ছে।'
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে বিদ্যুতের চেয়েও গ্যাস সংকটে তাঁদের বেশি ভুগতে হচ্ছে বলেও জানান মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, 'লোডশেডিং ঘণ্টা দুয়েক ম্যানেজ করা গেলেও গ্যাস সংকট ম্যানেজ করা যাচ্ছে না। এর ফলে আমাদের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সিডিউল ঠিক থাকছে না। এয়ার-শিপমেন্ট ব্যাহত হচ্ছে।' সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সামনে ব্যবসা বাড়ানোর যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল, তা এসব কারণে হাতছাড়া হচ্ছে বলেও মনে করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
এ বিষয়ে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ বলেন, তাঁদের শিডিউল অনুযায়ী লোডশেডিং হচ্ছে। লাইনের সমস্যার কারণে কিংবা কাজের জন্য কোথাও কোথাও সংযোগ বেশিক্ষণ বন্ধ থাকতে পারে। লোডশেডিংয়ের শিডিউল সঠিকভাবেই ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।