সুপেয় পানির জন্য হাহাকার
-Pic-12-samakal-6436f15841c0a.jpg)
পানি সংগ্রহ করছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার দিয়াপাড়া গ্রামের গৃহবধূরা - সমকাল
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি ও লালপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮:০০
পাবনার ঈশ্বরদী ও নাটোরের লালপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। শহরের বেশিরভাগ এলাকার নলকূপে হাজার চাপেও উঠছে না পানি। অকেজো পড়ে আছে সেগুলো। পৌরসভার সাপ্লাই পানির সরবরাহও নিরবচ্ছিন্ন নয়। স্থানীয়রা তীব্র পানির সংকটে পড়েছেন।
বুধবার ঈশ্বরদী শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, পুকুরে গোসল সেরে বাড়ির বালতি, কলস ভরে পানি সংগ্রহ করছিলেন বেশ কয়েকজন। খাবার ও রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করতে ছুটতে হচ্ছে যেখানে গভীর নলকূপ কিংবা সাবমার্সিবল পাম্প আছে। শহরের উমিরপুর, ফতেমোহাম্মদপুর, মাজড়িয়া, স্কুলপাড়াসহ প্রায় সব এলাকাতে একই অবস্থা।
ফতেমোহাম্মদপুর, নিউ কলোনি, তিনতলা এলাকার ৫ হাজার বাসিন্দা স্থানীয় মসজিদের সাবমার্সিবল পাম্প থেকে দিনে দুইবার লাইন ধরে পানি সংগ্রহ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, তিন-চার দিন ধরে বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। সেহরির সময় ও দুপুরে মসজিদ থেকে লাইন ধরে পানি সংগ্রহ করছেন।
পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের জন্য ১১টি পানির পাম্প রয়েছে। ৭টি পাম্পের মাধ্যমে পৌরবাসীকে পাইপলাইনে পানি সরবরাহ করা হয়। কয়েকদিন আগে দুটি পাম্প বিকল হয়ে যায়। সেগুলো মেরামত করা হলেও পানির চাপ কম থাকায় সরবরাহ স্বাভাবিক নেই।
পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা জানান, পৌরবাসীর পানির কষ্ট লাঘবে পানি সরবরাহের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে পানির জন্য আর কষ্ট করতে হবে না।
পানির জন্য হাহাকার চলছে নাটোরের লালপুরেও। বুধবার দুপুরে চংধুপইল ও আড়বাব ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘুরে দেখা যায়, নলকূপগুলোতে পানি উঠছে না। কলস, বালতি নিয়ে সাবমারসিবল পাম্পে ভিড় করেছে এলাকার মানুষ।
কথা হয় চংধুপইল ইউনিয়নের দিয়াড়পাড়া গ্রামের ডালিয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাড়ির কলে ২০ বার চেপেও এক গ্লাস পানি ওঠে না। পানির অভাবে কোনো কাজও করতে পারছি না। বাধ্য হয়ে ১০ মিনিট হেঁটে পানি নিতে এসেছি।’
চলতি মাসে ১০টি ইউনিয়নে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে ৩২ ফুট নিচে নেমেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। চরাঞ্চল বিলমাড়িয়া, ঈশ্বরদী, লালপুর, দুড়দুড়িয়া, চংধুপইল, আড়বাব ও ওয়ালিয়া এলাকায় ভুগর্ভস্থ পানির স্তর ৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে। ১০টি ইউনিয়নে ৫৪ হাজার হস্তচালিত অগভীর নলকূপ রয়েছে। সেগুলো থেকে পানি ওঠা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। পানির অভাবে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষক।
ওয়ালিয়া গ্রামের কৃষক সনি আলী বলেন, ‘রাত ৩টার সময় মাঠে গিয়ে ৩ ঘণ্টা চেষ্টা করেও এক বিঘা জমিতে পানি দিতে পারি নাই।
- বিষয় :
- সুপেয় পানি
- হাহাকার
- পানি