উদ্বোধনের আগেই ৩ কোটি টাকার সেতুর সড়কে ধস

নলছিটির সরমহল গ্রামের সিংহবাড়ির খালে সদ্য নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কে ফাটল দেখা দিলে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয় - সমকাল
মো. মিজানুর রহমান, নলছিটি (ঝালকাঠি)
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০
ঝালকাঠির নলছিটিতে নির্মাণ করা একটি সেতু উদ্বোধনের আগেই সংযোগ (অ্যাপ্রোচ) সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসে পড়েছে একাধিক স্থানে। উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের সরমহল গ্রামের সিংহবাড়ির খালে সেতুটি নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি। এর মাধ্যমে ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি গ্রাম সংযুক্ত হবে।
অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার, সংযোগ সড়কে ঢাল কম রাখা, সড়ক মাটির পরিবর্তে বিটি বালু দিয়ে ভরাটসহ অনিয়ম করা হয়েছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ অস্বীকার করে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দায়ী করেছে। আগামী মাসে সেতুটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে ঠিকাদার নিম্নমানের পিচ, ইট, বালু, পাথর ও পরিমাণে কম সিমেন্ট দিয়ে ব্লক তৈরি করেছে। সরমহল গ্রামের সেলিম ফরাজি বলেন, এ সড়ক ও সেতু কতদিন টিকবে, বলা মুশকিল।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে মেসার্স এম এম এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে কাজটি পান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আল-আমীন। পরবর্তী সময়ে তিনি বিক্রি করেন মো. নান্নু, মনির হোসেন, রিয়াজ ও কামাল হোসেন নামে চার ব্যক্তির কাছে। ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু ও দুই পাশে ১০৪ মিটার সংযোগ সড়কের কাজের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলে এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বালু সরে গিয়ে কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ব্লকও ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ঠিকাদার ফাটল ও ধসে পড়া অংশ পলিথিন ও কম্বল দিয়ে ঢেকে দিয়েছে।
স্থানীয় সরমহল গ্রামের কালাম সরদার, রুহুল আমীন হাওলাদার ও তুহিন সরদার বলেন, তাড়াহুড়ো করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইছাহাক সরদার বলেন, কোনোমতে উদ্বোধন করিয়ে ঠিকাদার দায়িত্ব শেষ করতে চেয়েছেন।
স্থানীয় কুশঙ্গল ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন সিকদার বলেন, আগ্রাধিকার ভিক্তিতে সেতুটি নির্মাণের জন্য সুপারিশ ও অর্থ বরাদ্দ করেন আমির হোসেন আমু এমপি। সেতুটি আগামী সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বোধনের কথা ছিল।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন মনির হোসেন বলেন, রড, সিমেন্ট, পাথরসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভারী বর্ষণে সংযোগ সড়কের যে ক্ষতি হয়েছে, তা সংস্কার করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইকবাল কবীর বলেন, ঠিকাদার দ্রুত সংস্কার করে দেবে। নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করলে বিল পাবেন না।