টানা বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামে জনজীবন বিপর্যস্ত, বাড়ছে নদ-নদীর পানি

জেলার ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে জলাবদ্ধতা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:০১ | আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:০১
শহরের পশুর মোড়ের রিকশাচালক খোকন মিয়া বলেন, আজ সকাল থাকি বিকেল হলো বৃষ্টিত ভিজি ৪টা ভাড়া মারছি। মাত্র ৬০ টাকা কামাই হইছে। বাজার করার কোনো টাকা নাই। ঘর থেকে মানুষ না বেড়ালে ভাড়া হয় কেমনে।
কদমতলা গ্রামের মো. নুর ইসলাম বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। কাজ কাম সবকিছু বন্ধ। টাকার চিন্তায় কিছু ভালো লাগে না। রাত পোহালে কিস্তি। ঘরে বাজার সদাই নাই। খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়ছি। এভাবে বৃষ্টি হলে মানুষের চলাফেরা কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে যাবে।
জেলার রাজারহাট কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় সর্বোচ্চ ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় জেলায় হালকা থেকে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাতে সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. সুবল চন্দ্র রায় বলেন, দু'দিন ধরে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। আরও দু'দিন এ বৃষ্টিপাত অব্যহত থাকবে।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি শহরের অনেক স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা, ফায়ার সার্ভিস অফিস, হাসপাতাল চত্বর, হাটির পাড়, পশুর মোড়, পুরাতন থানাপাড়াসহ পৌরসভার একাধিক ওর্য়াডে জলাবদ্ধতার কারণে লোকজন বিপাকে পড়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জানায়, আজ দুপুর ৩টায় জেলার নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ২৫৮ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। এ ছাড়া চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ২২১ সেন্টিমিটার, কুড়িগ্রাম সদর পয়েন্টে ধরলার পানি ১১৪ সেন্টিমিটার, পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি ১৬৪ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে।

ধরলা তীরবর্তী মাধবরাম গ্রামের কৃষক মো. আনারুল কবির বলেন, কয়েক দফা বন্যায় আমন আবাদ নষ্ট হয়ে গেছে। আবারও নদীর পানি বাড়ছে। গত দু'দিন ধরে যে হারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এভাবে বৃষ্টি পড়তে থাকলে পানিতে আমন ক্ষেত তলিয়ে যাবে। এবার আবাদ নষ্ট হলে এ মৌসুমে আর আমনের আবাদ করা যাবে না।
তীরবর্তীর শুলকুর বাজারের আরেক বাসিন্দা মো. রোকন মিয়া বলেন, নদীর মাঝত গতকাল সকালে চর দেখছি। আর আজ পানিতে সোগ তলাইছে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শনিবার থেকে জেলায় ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এ কারণে নদ-নদীরর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা স্বাভাবিক। তবে এই মৌসুমে বন্যা পরিস্থিতির কোনো সম্ভাবনা নেই।