ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সেতু ভেঙে পড়ায় চলাচলে ভোগান্তি

সেতু ভেঙে পড়ায় চলাচলে ভোগান্তি

তিন বছর আগে ভেঙে পড়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার খলচান্দা সেতুটি -সমকাল

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩ | ০৯:৪৫

‘তিন বছর আগে বালুর ট্রাক লইয়া দেবে যায় সেতু। তখন কষ্ট কইরা হইলেও চলাচল করা যাইত। সাইকেল, অটোরিকশা নিয়া পার হইবার পারতাম। অহন তো এই সেতু একেবারেই হেইলা পড়ছে। সেতুডা ভাঙা পড়ায় অহন তো চার কিলোমিটার ঘুইরা মালপত্র লইয়া যাওন লাগে। সেতুডা ভাইঙা যাওয়ায় আমরা খুব কষ্টে আছি।’ এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার খলচান্দা গ্রামের কৃষক জমশেদ আলী।

এই কষ্ট শুধু জমশেদের (৬৫) নয়, চার গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষের। নালিতাবাড়ী উপজেলার আন্দারুপাড়া শান্তির মোড় এলাকার খলচান্দার সেতুটি সংস্কার না করায় দুর্ভোগ তাদের। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে– খলচান্দা, আন্দারুপাড়া, বুরুঙ্গা ও বারমারী এলাকার লোকজনের যাতায়াতের জন্য প্রায় ১৮ বছর আগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের অর্থে খলচান্দা এলাকায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০২০ সালে বালুবোঝাই একটি ট্রাক পার হওয়ার সময় দেবে যায় সেতুটি। সংস্কারের অভাবে সম্প্রতি সেতুটি ভেঙে পড়ে। এতে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় চার কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। প্রায় তিন বছর ধরে সেতুটি ভেঙে পড়ে থাকলেও মেরামতের উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের অর্থায়নে পারাপারের জন্য ভেঙে পড়া সেতুর ২০ মিটার ভাটিতে একটি সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিন দেখা গেছে, সেতুটির কিছু অংশ ভাঙা। হেলে পড়ায় একেবারেই চালাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেতুটি। এর কিছুটা দূরে একটি সাঁকো। তার ওপর দিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী। খলচান্দা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত কোচ বলেন, ‘আমাদের গ্রামে আসার রাস্তাটা মাটির। বর্ষা মৌসুমে চলাচলে খুব কষ্ট হয়। এখন সেতুটি একেবারেই ভেঙে পড়ায় আমাদের কষ্ট আরও বেড়ে গেছে। সরকারিভাবে একটি সেতু নির্মাণ করে দিলে চার গ্রামের মানুষের কষ্ট দূর হতো।’ স্থানীয় বাসিন্দা পরমেশ্বর কোচ জানান, কেউ অসুস্থ হলেও সেতুর কারণে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন না তারা। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায় খুব কষ্টে। এখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণ করে দিলে উপকার হতো তাদের। অটোচালক ফোরকান আলী বলেন, ‘এতদিন তো সেতু দেবে গিয়ে হেলে থাকলেও যাতায়াত করা যেত। কিন্তু এখন তো সেতুটি একেবারেই ভেঙে পড়েছে। সেতু পার হলেই আমার বাড়ি। কিন্তু রাতের বেলায় বাড়ি ফিরতে হয় চার কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ঘুরে।’ কথা হয় পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, সংস্কার না হওয়ায় শাস্তির মোড়ের খলচন্দা সেতুটি সম্পূর্ণ দেবে গেছে। মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে দেবে যাওয়া সেতুর পাশে একটি সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। সেখান দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে পারে এলাকাবাসী। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, সেখানে একটি সেতু নির্মাণে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ পাওয়া যাবে। বরাদ্দ পেলেই সেতু নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।

আরও পড়ুন

×