ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

নির্বাচনী সহিংসতায় মৃত্যু: পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

নির্বাচনী সহিংসতায় মৃত্যু: পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ

মাসুদ রানা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৪ | ১৯:৫৭

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর প্রতিপক্ষের হামলায় পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক মাসুদ রানার মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। নিহতের স্ত্রী নাজমা খাতুন দাবি করেন, তিনি বৃহস্পতিবার ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে কামারখন্দ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু শুক্রবার সন্ধা পর্যন্ত অভিযোগটি মামলা আকারে নথিভুক্ত করেনি পুলিশ। 

নির্বাচনে চশমা প্রতিকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম রেজার সমর্থক ছিলেন মাসুদ রানা। বুধবার নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রাতে বাড়ি ফেরার পথে বলরামপুর বাজারে আরেক পরাজিত তালা প্রতিকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের সমর্থকদের হামলার শিকার হন তিনি। সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিলে রাত সোয়া ১২টার দিকে মাসুদ রানা মারা যান। তিনি কামারখন্দের শালবরিশার বিকেইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক এবং দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকার উপজেলা ফটো সাংবাদিক। একই ঘটনায় মারধরের শিকার হন ওই পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম প্রিন্স ও কামারখন্দ উপজেলা প্রতিনিধি শিশির আকন্দ।

নাজমা জানান, পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের সমর্থক রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমানের লোকজনের হামলায় তার স্বামী মারা গেছে। তিনি থানায় যে অভিযোগ দিয়েছেন তাতে কামারখন্দের ৮ নং রায়দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছামাদ প্রামানিকের ভাতিজা পুলিশ কনস্টেবল হাসান প্রামানিকের নাম আছে। প্রধান অভিযুক্ত লুৎফর আওয়ামী লীগ নেতা ছামাদের বড় ভাই। তারা প্রভাবশালী। সেজন্য পুলিশ মামলা নিতে চাচ্ছে না। শুক্রবার থানায় গিয়ে ওসির সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু অভিযোগে চার নম্বর আসামি হাসান প্রামানিক পুলিশ কনস্টেবল হওয়ায় ওসি তার নাম বাদ দিয়ে নতুন করে অভিযোগ জমা দিতে বলেছেন। নইলে মামলা রেকর্ড সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন।  

এ বিষয়ে জানতে কামারখন্দ থানার ওসি রেজাউল ইসলাম ও সার্কেল অফিসার এএসপি আদনান মুস্তাফিজের সরকারি ফোন নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিক কল এবং ক্ষুদেবার্তা পাঠানোর পরও তারা সাড়া দেননি। একই থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, শিক্ষক ও সাংবাদিক মাসুদরানার মৃত্যু ঘিরে রহস্য থাকায় মামলা আপাতত রেকর্ড হয়নি। সার্কেল অফিস তদন্ত করছে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, ভিকটিমের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী বা স্থানীয়রা পুলিশের কাছে ভিন্ন তথ্য দিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনেও মরদেহে মারধরের চিহ্ন নেই। পুলিশ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সে জন্যই অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে সময় নিচ্ছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

×