‘তুমি কোন দোকানের লাড্ডু খাও, তাও জানি’, ছাত্রীকে ইবি শিক্ষক

অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: সমকাল
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪ | ২০:১৯
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হেনস্থা, অশ্লীল গালাগাল, কথা না শুনলে নম্বর কম দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘স্যার আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখেন। বিভিন্ন সময় ক্লাসে সবার সামনে আমার চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন। সবার সামনে আমাকে হেনস্তা করে বলেছেন, তুমি কোন দোকানের লাড্ডু খাও, তাও আমি জানি। কোনো ছেলের সঙ্গে ঘোর, সব খবর আমার কাছে আসে। আমি কোন জামা পরলাম, কার সঙ্গে কোথায় ঘুরতে গেলাম এসব নিয়ে ক্লাসে সবার সামনে অপমান করতেন। এছাড়া তিনি আমাকে উল্টা করে ফ্যানে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন।’
সোমবার দুপুরে এসব অভিযোগ তুলে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা এ দিন উপাচার্যের কাছে ২৭টি অভিযোগসহ স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন।
এ দিন দুপুর ১টায় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ ও দুপুরের সিডিউলের বাস আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী এসে উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা প্রধান ফটক ছেড়ে দেন। দুপুর ৩টায় উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৭ টি অভিযোগ এনে তাঁর বহিষ্কারের দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন। উপাচার্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, হাফিজুল ইসলাম প্রায়ই শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের অশ্লীল ও কুৎসিত ভাষায় গালাগাল করতেন। তাঁর কথা না শুনলে পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া, মেয়েদের ব্যক্তিগত নম্বারে কল দিয়ে বিরক্ত করা, ফেসবুকে ভূয়া আইডি দিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ কথোপকথনসহ আরো অনেক অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফি বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। উপাচার্য তদন্ত কমিটির গঠনের আশ্বাস দিয়েছেন। সে কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, অভিযোগ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তারা শিক্ষার্থীদের সব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।
- বিষয় :
- ইবি
- যৌন হয়রানি
- শিক্ষক
- ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি