ভাঙন হুমকিতে স্কুল বিজিবি ক্যাম্প

অসময়ে পদ্মায় ভাঙন দেড়শ বিঘা জমি বিলীন
চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৪৭
অসময়ে ভাঙছে পদ্মা। হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের গ্রাম ও বসতভিটা। ইতোমধ্যে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার দেড়শ বিঘা জমি বিলীন হয়েছে। অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও হুমকিতে রয়েছে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিজিবি ক্যাম্পসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
উপজেলার ১৫ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত। এর মধ্যে ৭ কিলোমিটার জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ এলাকাগুলো রক্ষা পেলেও বাঁধহীন জায়গা ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে পাউবো জিও ডাম্পিং করলেও দায়সারা হওয়ায় কোনো কাজে আসেনি। এক মাস ধরে চলা ভাঙনে চারঘাট পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের গোপালপুর, চন্দনশহর ও পিরোজপুর এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গোপালপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নদীপাড়ের যেসব এলাকায় প্রতি বছর শীতকালে গম ও সরিষার চাষ হতো এ বছর সেসব জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনও বাড়ছে। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা থেকে দক্ষিণ পিরোজপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার হুমকির মধ্যে রয়েছে। কিছু জায়গায় নদী ভেঙে গ্রাম রক্ষা বাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে।
একই গ্রামের আব্বাস আলী বলেন, ‘প্রতি বছর বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা বাড়লেও শীতে নদী অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকে। এ বছর হঠাৎ করেই ভাঙন শুরু হয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে শত শত ঘরবাড়ি হারিয়ে যাবে। চলমান প্রকল্পের আওতায় এনে এ এলাকায় বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর তীরের স্থাপনাগুলো নদীভাঙন রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ৭২২ কোটি টাকার কাজ চলছে। এ প্রকল্পের আওতায় চারঘাটের ইউসুফপুর ও পিরোজপুরে ৮০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ এবং ভাঙন ঠেকাতে পিরোজপুর এলাকায় ৬২ হাজার ও ইউসুফপুর এলাকায় ৯১ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজ করা হয়েছে।
চন্দনশহর গ্রামের আলতাফ হোসেনের অভিযোগ, বর্ষার আগেই জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরুর কথা ছিল পাউবোর। তা করা হয়নি। এখন সব ব্যাগ নদীতে ভেসে গেছে। আগে সেখানে ফসল আবাদ করতাম এক মাসের মধ্যে তা নদীতে চলে গেছে।
পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দীন শেখ বলেন, বিদ্যালয়টি স্থাপনের পর দু’ দফা নদীতে বিলীন হয়েছে। এবার নদী থেকে ২৫ মিটার দূরে অবস্থান করছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীতে বিলীন হবে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে; সাড়া মেলেনি।
জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ে ত্রুটির কথা স্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহী পওর বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু রৌশন মাসউদ বলেন, ডাম্পিং করার আগেই বেশির ভাগ জিও ব্যাগ পানিতে তলিয়ে গেছে। এজন্য ভাঙনের স্থানে যতগুলো জিও ব্যাগ গণনা করে পাব ঠিকাদারকে ততগুলোরই বিল দেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড রাজশাহী পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, পিরোজপুর-গোপালপুর এলাকার ভাঙনের বিষয়টি অবগত আছি। চারঘাটের যেসব এলাকায় এখনও বাঁধ নির্মাণ হয়নি কিংবা পুরোনো হয়ে গেছে সেগুলোর বিষয়ে একটি প্রকল্প বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।
- বিষয় :
- পদ্মা