লামায় পুড়িয়ে দেওয়া হলো ১৬-১৭ জুমঘর

বান্দরবানের লামায় ঘর পুড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড শীতে খোলা জায়গায় শিশু কোলে এক ত্রিপুরা নারী সমকাল
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০০:১৮
বান্দরবানের লামায় ত্রিপুরাদের ১৬-১৭টি জুমঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সরই ইউনিয়নের তঙ্গাঝিরি পাড়ায় ঘটে এ ঘটনা। সংবাদ পেয়ে গতকাল বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের মাঝে সহায়তা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানায়, তঙ্গাঝিরি এলাকার বেতছড়া পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের দখলীয় জায়গা হিসেবে পরিচিত ছিল। এলাকাটি আগে অনাবাদি ছিল। সেখানেই এসপির বাংলো নামে একটি রেস্টহাউস গড়ে তোলা হয়। ৫ আগস্টের পরে ওই জমিতে জুমঘর
তৈরি করে লামা ও আলীকদম উপজেলার কয়েকটি
ত্রিপুরা পরিবার। তাদের ঘরগুলো মঙ্গলবার রাতে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর প্রচণ্ড শীতে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত গুঙ্গামণি ত্রিপুরা। তিনি বলেন, তঙ্গাঝিরি নতুন বেতছড়া পাড়ায় কোনো গির্জা নেই। তাই বড়দিন উদযাপনের জন্য সব পরিবারের সদস্য মঙ্গলবার পুরাতন তঙ্গাঝিরি পাড়ার গির্জায় যান। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা তাদের জুমঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।
এ আগুনে গুঙ্গামণি ছাড়াও ঘর হারিয়েছেন বিত্তাচন্দ্র ত্রিপুরা, রুমালী ত্রিপুরা, ব্রেন ত্রিপুরা, মার্জেল ত্রিপুরা, দয়াচন্দ্র ত্রিপুরা, চিপরাম ত্রিপুরা, অগাসিং ত্রিপুরা,
বাসীচন্দ্র ত্রিপুরা, অব্যিয় ত্রিপুরা, সিয়ান্দ ত্রিপুরা, অজারাম ত্রিপুরা, গ্রেন ত্রিপুরা, বিজয় ত্রিপুরা, সামেল ত্রিপুরা ও অংসারাই ত্রিপুরা।
অগ্নিসংযোগের সংবাদ পেয়ে বুধবার ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা লামার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ণ দেব, লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক ও এসআই জুনায়েদ। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে কম্বল ও চাল দেওয়া হয়।
গুঙ্গামণি ত্রিপুরার ভাষ্য, একই এলাকায় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন সন্ত্রাসী তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। এ বিষয়ে ১৯ নভেম্বর স্টিফেন ত্রিপুরা, মসৈনিয়া ত্রিপুরা, যোয়াকিম ত্রিপুরা, সুরেন্দ্র ত্রিপুরা, বাশাত ত্রিপুরা, শিমিয়ন ত্রিপুরার নাম উল্লেখ করে থানায় জিডি করেন। অগ্নিসংযোগের পর ওই সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ মোবাইল ফোনে কল করে বাঙালিদের নামে থানায় অভিযোগ দিতে বলছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
লামা থানার ওসি এনামুল হক বলেন, তারা সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, পেলে তদন্তের পর ব্যবস্থা নেবেন।
- বিষয় :
- কৃষিকাজ