মাজারের ওরস ঘিরে উত্তেজনা

ছবি-সংগৃহীত
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৩:২৮
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা ভাবখালী ইউনিয়নের একটি মাজারের ওরস অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত শুক্রবার স্থানীয় মুসল্লিদের একটি পক্ষ ওরসে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করে ওরস প্রতিহতের ঘোষণা ও থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
ভাবখালী ইউনিয়নের চকবন পাথালিয়া গ্রামের আউলিয়া বাজারে হজরত শাহ নেওয়াজ আলী ফকিরের (র.) মাজারে ওই ওরসের আয়োজন চলছে। এখানে ২৯ থেকে তিন দিনব্যাপী ৫০তম বার্ষিক ওরস হওয়ার কথা।
এলাকাবাসী জানান, ওরসের নামে বিদাত ও শিরক করা হয় দাবি করে ১৯ জানুয়ারি স্থানীয় কিছু কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম মাজারের লোকজনকে গিয়ে ওরস বন্ধ রাখতে বলেন। এ সময় মাজারের লোকজন তাদের কাছে গান-বাজনা বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। এরই মধ্যে স্থানীয় ভাবখালী বাজারে ইত্তেফাকুল উলামা ও ভাবখালী ঐক্য উলামা পরিষদের ব্যানারে গত শুক্রবার বিকেলে মানববন্ধন করেন মুসল্লিরা। ওরস বন্ধের দাবিতে তারা থানায় একটি আবেদনও করেন।
রোববার মাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাশের জমিতে দোকানপাট ও নাগরদোলা বসানোর প্রস্তুতি চলছে। মাজারের সামনে একটি বড় তোরণ করা হয়েছে। মাজারের কিছু স্থানে রং করছেন কয়েকজন শ্রমিক। মাজারের ভেতরে কোরআন তেলাওয়াত করছেন একজন ভক্ত। মাজারের পাশে জামে মসজিদ ও একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসা আছে।
ঢাকা থেকে আসা একজন ভক্ত বলেন, ‘৪০ বছর ধরে এই মাজারের মাহফিলে আসি; কিন্তু এবারের মতো পরিস্থিতি কখনো হয়নি। এখানে অন্যায় কিছু হয় না।’
মাজার কমিটির সদস্য মনির উদ্দিন জানান, ওরস অনুষ্ঠানের জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ৫ জানুয়ারি আবেদন করা হয়। এত বছর ওরস উদযাপনে কোনো বাধা আসেনি; কিন্তু এবার স্থানীয় কয়েকজন ইমাম এটি বন্ধ রাখতে বলছেন।
মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ফকিরের ভাষ্য, ৫০ বছর ধরে এই ওরস অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। দেশজুড়ে ওরস হলেও এখানে ওরস বন্ধের পাঁয়তারা করছে কিছু লোক।
উত্তেজনার একপর্যায়ে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান। বৈঠকে ওরসের নামে বাজার, গানবাজনা ও অশ্লীলতা হবে না বলে আশ্বাস দেয় মাজারের লোকজন।
ইত্তেফাকুল উলামার ভাবখালী ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোবারক হোসেন বলেন, মাজারে ওরসের নামে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়। সেখানে মাদক, জুয়া ও গানবাজনা হোক তারা চান না। শুধু জিকির ও কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। যদি এর ব্যত্যয় হয় বিষয়টি প্রশাসন দেখবে বলে জানিয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান জানান, ওরস ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হলে উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় আলোচনা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশের নজরদারি থাকবে।