ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

দরকারি সড়কই হয়নি বিলের মধ্যে কালভার্ট

দরকারি সড়কই হয়নি বিলের মধ্যে কালভার্ট

ফাইল ছবি

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫ | ২৩:৪১

ঝালকাঠির নলছিটিতে একটি সড়ক ও কয়েকটি কালভার্ট-বক্স কালভার্ট নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের ফয়রা গ্রামের বাসিন্দাদের ভাষ্য, ছয় বছর আগের প্রকল্পের আওতায় সড়কের কাজ হয়েছে দায়সারা। একমাত্র সেতুটি করা হয়েছে বিলের মাঝখানে। দুটি কালভার্টের অর্ধেক সড়কে, বাকি অর্ধেক পাশের খালে পড়েছে। এ কারণে এগুলো তাদের কোনো কাজেই আসছে না। 
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বরিশাল-ঝালকাঠি (বিঝেপি) প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে একই প্যাকেজে উপজেলার চারটি সড়কসহ কয়েকটি কালভার্ট ও বক্স কালভার্টের দরপত্র দেওয়া হয়। কয়েক দিন কর্মকর্তাদের কাছে ঘোরাঘুরি করেও কালভার্ট ও বক্স কালভার্টের সংখ্যা জানা যায়নি। প্রকল্পের মধ্যে ছিল কুশঙ্গল ইউনিয়নের মনপাশা বাজার থেকে উকিলবাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক, একটি কালভার্ট ও আটটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ। 
ওই প্রকল্পের কাজ পান ঠিকাদার মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনকে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ দেন। ২০২০ সালের জুনে ওই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ছয়টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। দুটির কাজ হয়নি। একমাত্র কালভার্টটি করা হয়েছে ফয়রা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেনের বাড়ির পূর্ব পাশের বিলে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কালভার্টটির পূর্বপাশের সড়কটি খানাখন্দে ভরা। বহু বছর আগের ইটের সলিং সরে এটি এখন চলাচলের অযোগ্য। প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করলেও তাদের কাজে আসছে না বিলের কালভার্টটি। 
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখনও উদ্বোধন হয়নি। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে শ্যাওলাধরা কালভার্টটি। প্রকল্পের প্রায় সাত বছর হতে চললেও পাশে সড়ক নির্মিত হয়নি। 
ফয়রা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম, মো. দুলাল ও শামীম হোসেনের ভাষ্য, ওই জায়গায় সেতুটির কোনো প্রয়োজন ছিল না। আটটি কালভার্টের মধ্যে ছয়টি নির্মিত হয়েছে। এগুলোর অবস্থাও নাজুক। এই রাস্তাটি দিয়ে ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। কিন্তু সেটির কাজই হয়নি। ঠিকাদারের লোকজন এলজিইডি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রয়োজনীয় রাস্তা নির্মাণ না করে বিলে কালভার্টটি নির্মাণ করেন। 
এমন অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার মহিউদ্দিন আহমেদ ও সাব-ঠিকাদার সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দু’জনই ৫ আগস্টের পর থেকে লাপাত্তা। 
এলজিইডির নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবিরের ভাষ্য, তিনি যোগ দেওয়ার আগেই এই কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এই সড়ক নির্মাণের জন্য আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এলেই দ্রুত সেটি নির্মাণের চেষ্টা করবেন। এতে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

আরও পড়ুন

×