ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

শিক্ষককে খুঁটিতে বেঁধে মারধর, গ্রেপ্তার ২

শিক্ষককে খুঁটিতে বেঁধে মারধর, গ্রেপ্তার ২

ফাইল ছবি

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫ | ১৯:৪৯

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে খুঁটিতে বেঁধে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- আবদুল হান্নান ও আবু বক্কর। তারা কেঁওচিয়া ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মৃত শামসুল ইসলামের ছেলে। 

ভুক্তভোগীর নাম আবদুর রহমান। তিনি বান্দরবান সদর উপজেলার ভাগ্যকুল কদুখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মারধরে গুরুতর আহত হয়ে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রোববার রাতে ছয়জনকে এজাহারভুক্ত এবং ছয়-সাতজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা করেন। এজাহারভুক্ত অপর আসামিরা হলেন– আবু বক্করের ছেলে মুসলিম উদ্দিন হিরু, ভাই মো. হানিফ, মো. সোহাগ ও মোহাম্মদ ইকবাল। 

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আবদুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে আসামিদের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। আবদুর রহমানের ভাইবোন বিবাদীদের পরিবারকে কিছু জায়গা বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু আবদুর রহমান তাঁর অংশ বিক্রি করেননি। এর জেরে শুক্রবার রাতে আসামিরা আবদুর রহমানকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের দস্তিদার বাজারে এক মুদি দোকানে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি রক্ষা পান। এ ঘটনার পরদিন আবদুর রহমানকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

আবদুর রহমান জানান, আসামিরা তাঁর কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তিনি স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করার ভয় দেখায়। পরে তারা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তাঁকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত ও কিল-ঘুসি মেরে গুরুতর আহত করে। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আসামি মুসলিম উদ্দিন হিরু বলেন, আবদুর রহমানরা ১২ ভাইবোন। তাদের মধ্যে ১০ জন তাদের কাছে জমি বিক্রি করেছেন। আবদুর রহমান ওই জায়গায় তার অংশটুকু বিক্রি করেননি। তবে তিনি তাঁর মূল জমি থেকে কয়েক গুণ দখল করে রেখেছেন। এ বিষয়ে তাঁকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তিনি শুনছিলেন না। ঘটনার দিন তাঁর সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। 

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সাতকানিয়ার ঢেমশা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন, জায়গায় বিরোধ থাকলে সেটা আইনগতভাবে অথবা বৈঠকে বসে সমাধান করা যেত। একজন শিক্ষককে এভাবে প্রকাশ্যে গাছের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর ও হেনস্তা করা মোটেই উচিত হয়নি। 

সাতকানিয়া থানার ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন

×